আমি
অনেক অনেক দিন থেকে একটি প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়িয়েছি , কেন বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের ঘটনা শুনতে পাওয়া যায় ?
আমার
অনুসন্ধান আর উপলব্দি তুলে ধরছি ...
আমি
গত এক যুগে আমার অঞ্চলে তথাকথিত সংখ্যা লঘু নির্যাতনের একটি ঘটনাও শুনিনি একমাত্র জাতীয় পর্যায়ে আওয়ামীমনা গেলো গেলো প্রচার ছাড়া । আমাদের
পারিবারিক বন্ধু , আমাদের বন্ধুদের বন্ধু , আমাদের প্রতিবেশিদের মধ্যে , কর্মস্থলে , শিক্ষা প্রতিস্টানে , সরকারী সেবা সমুহে চোখে পড়ার মতো ভীন্ন মতাবলম্বি পেয়েছি । আমি
তাদের কে কোনদিনও নির্যাতন করতে হবে এমন ভাবনাই আসে নাই । এমন
অনেক ক্ষেত্রে পেয়েছি হিন্দু বিশ্বাসের মানুষজন তুলনামুলক এগিয়ে আছেন । মাগরেবের
আযান যখন হতো আমরা উলুধ্বনি শুনতে পেতাম , রথের যাত্রায় শহর জুড়ে সব মানুষ মিলে মিশে একাকার হয়ে যেতেন । পাড়ায়-মহল্লায় সামাজিক সিধ্বান্তে সমান অংশ গ্রহণ করতে পারতেন , নিজ পছন্দের রাজনৈতিক দল/ মত চর্চা করতেন । তবে
এই রাজনীতিক স্টান্ট গুলো কোথা থেকে আসে আর কেনো আসে ?
যেতে
হবে একটু পেছনে , আর ভাবতে হবে সবচেয়ে জরুরী প্রশ্নটি নিয়ে ...
এই
প্রচারে কারা লাভবান হচ্ছেন অথবা কারা এই সবের পেছনে কলকাঠি নাড়েন এবং বুঝতে হবে বাংলাদেশের সামাজিক , রাজনীতিক , অর্থনীতিক অবস্থা । বাংলাদেশের
মানুষের মনস্তাত্তিক আলোচনাও জরুরী ।
স্বাধীনতার
পর থেকে যে সব যায়গায় তথাকথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা শুনা যায় তন্মধ্যে বরিশাল , বিক্রমপুর , ফরিদপুর উল্লেখযোগ্য । গত
চার দশক ধরে যারা হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের রাজনীতিক রক্ষিতা , পোষ্য বা ভোট ব্যাঙ্ক করে রেখেছে তাদের জবাব দিতে হবে কেন এসব হয় , কি তারা করেছেন আর কেনই বা বরিশাল , বিক্রমপুর , ফরিদপুর অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি এই ধরণের ঘৃণ্য ঘটনা চলে আসছে ।
কেনো
শুধু নির্বাচন আসলেই এমন হীন প্রচার বেড়ে উঠে ? নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের পরে এসব কাদের স্বার্থে করা হয় ? হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের নিজেদেরই সামনে আসতে হবে এবং রুখে দিতে হবে যারা তাদের নিয়ে রাজনীতিক সওদা করে ফেরেন ।
যে
প্রশ্নবিদ্ধ্ব নির্বাচন নামের ডাকাতি হয়েছে তার আয়োজক, ভারত ও ইসলামফোবিক শ্রেণী
গোষ্টির আদর্শগত পরাজয় কে প্রলেপ দিতেই এমন জঘণ্য কাজ করা হচ্ছে তা বলা অমুলক হবে না । মনে
রাখতে হবে এই সেই হাসিনা যিনি বিগত সরকারের সময় দেশে বিদেশে বাংলাদেশে সংখ্যা লঘু নির্যাতন হচ্ছে মন্ত্র ফেরি করেছেন , আর এর মুল্য আমরা জাতী হিসেবে দিয়েছি । নির্বাচনের
ভরাডুবি এবং জালিয়াতী থেকে সাধারণ মানুষ ও বিশ্ববাসির নজর
সড়াতে এমন কাজ যে করছেন না তা কে নিশ্চিত করবে । যদি
ধরে নেওয়া হয় , বি এন পি করেছে তবে খুজতে হবে , সারা দেশে যেসব মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছেন তাদের কতো ভাগ হিন্দু ভোটার রয়েছেন আর তারা কি প্রভাব ফেলতা পারেন ?
যারা
ভাবছেন আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাঙ্ক কেনো আওয়ামীলীগ নস্ট করবে তাদের কে ভাবতে হবে এমন নাজুক রাজনীতিক পরিস্থিতিতে কেনো এমন ভয়ঙ্কর ও হীন কাজ
বি এন পি করবে ?
এটি
যে একটি হাস্যকর রাজনীতিক নাটক তার প্রমাণ হিসাবে বলা যায় , প্রতি নির্বাচনেই ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া
নির্বাচন কাভার করে থাকেন , সেখানে তারা শহর-গ্রাম, ভি আই পি-অতি সাধারণ ভোটার উপস্থিতি তুলে ধরেন, নির্বাচনে অনিয়ম , নির্বাচনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন কিন্তু এইবার প্রথম আলোর বিরুদ্ধ্বে কিছু মানুষ উঠে পড়ে লেগেছেন কারন এই নির্বাচনকে প্রথম আলো শুদ্ধ্ব নির্বাচন বলে প্রচার করেনি । যে
ফটোগ্রাফটি নিয়ে বলা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা সেই ফটোগ্রাফে কিন্তু মুসলীম মহিলাও ছিলেন ।
দুঃখ
জনক বিষয় হলো কিছু শিক্ষিত দুবৃত্ত্য , রাজনীতিক বারবনিতা ও তাদের দালালগণ
দেশে বিদেশে সত্যের যে অপালাপ করছেন , তাদের দেখে লজ্জিত হই । এদের
মতো নীচ মানুষও বাংলাদেশে আছে , ভাবতে কষ্ট লাগে ।
এই
ঘৃণ্য কাজ করার পেছনে আরো যে কারনটি হতে পারে তা হলো জামায়াতের নস্ট ইমেজ তুলে ধরা । জামায়াত
কে রাজনীতির বাইরে রাখতে এসবের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা । স্বাধীন
বাংলাদেশের ধারণার সাথে তাদের বিরোধই যথেস্ট আমাদের রাজনীতি থেকে তাদের ছুড়ে ফেলতে । এছাড়াও
যুদ্ধাপরাধের যেসব অভিযোগে তারা অভিযুক্ত , তাতেই বাংলাদেশের মানুষ তাদের বর্জন করবে ।
মনে
রাখতে হবে মিথ্যার বেসাতি অল্প দিনেরই হয় । সত্যের
জয় নিশ্চয় হয় । আমার
দৃঢ• আশা
থাকবে আমরা যদি চার দশক পর যুদ্ধাপরাধিদের বিচার করতে পারি তবে হিন্দুদের উপর নির্যাতনকারীদেরও বিচার করতে পারবো ।
(অসমাপ্ত ...)
No comments:
Post a Comment