সময়
বদলে গেছে, বদলে যায় অনেক কিছু । বদলের
ঝড়ে এক ভয়ঙ্কর দেয়াল যা ধ্বষে যাবার কথা ছিলো কিন্তু তা না হয়ে বিবেধের এক নষ্ট ব্ল্যাক হোল আমাদেরকে দু ভাগে ভাগ করে দিয়েছে ! এর ফল কখনোই ভালো হবে না ।
বলছি
বাংলাদেশের কথা , খুবই প্রাসঙ্গিক হওয়ায় কিছু দিন আগে স্কটল্যান্ডের রেফারেন্ডামের কথা মনে করছি । ৫৫%
স্কটিশ স্বাধীনতা
বিক্রি করেছেন নিজ আয়েস আর প্রয়োজন এবং ভয়ে অপর দিকে ৪৫% স্কটিশ স্বাধীনতাকে হ্যা বলেছেন কিন্তু এখানে আলোচনার কি আছে ? এটাতো এখন সেটেলড ম্যাটার ! আসলেই কি তাই ?
না,
বিষয়টি এমন নয় । স্বাধীনতাকে
হ্যা বলা মানুষগণের সাথে সরাসরি কথা বলে এবং অনেকের কথা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনে মনে এটি প্রতিয়মান হয়েছে যে , এখানেই এর শেষ নয় । তাই
স্বাধীনতাকে যারা না বলেছেন তারা এবং সমাজ সচেতন মানুষগণ এই হ্যা এবং না গ্রুপকে একই সাথে আগামীর পথে হাটতে , রিকন্সিলেয়েশন এর ব্যাবস্থা করছেন ।
ফিরে
যাচ্ছি মূল আলোচনায় । বাংলাদেশ
এবং আমাদের হুমকিতে থাকা আগামী । স্বাধীনতাকে
ঘীরে অন্যতম চার ক্যান্সার আমাদের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে , যার আসু মুক্তি প্রয়োজন
। চলুন দেখা
যাক সেই চার ক্যান্সার কি কি ?
১। অত্যন্ত
পরিতাপের বিষয় আমাদের বেশ কয়েকটি প্রজন্ম খুব অল্প বয়স থেকে স্বাধীনতা বিষয়ক ভূল তথ্য শিখে বা জেনে বড় হয়েছেন ।
২। স্বাধীনতা
বিষয়ক কোর বিষয়গুলো নিয়ে সস্তা রাজনীতি চলছে দেশে ।
৩। জামায়াত
ও স্বাধীনতা বিরোধী ব্যাক্তি , প্রতিষ্ঠান আমাদের জাতীয় রাজনীতি করার সুযোগ করে নিয়েছেন ।
৪। যে
অন্যায় অনাচারের মুক্তি পেতে স্বাধীনতা অর্জন করা হয়েছে তা সাধারণ মানুষ পায়নি বরংচ আমরা এখন স্বদেশীদের হাতে এর চেয়ে ভয়ংকর ভাবে নিঃশেষ হচ্ছি , প্রতিদিন ।
এই
চারটি বিষয়ে আলোচার আগেই যদি আরেকটু গোছানো যায় তবে লেখার উদ্দেশ্য প্রকাশ সহজ হবে ।
সমস্ত
বাংলাদেশি মানুষকে দুই ভাগে যদি দেখা যায় ,
১। স্বাধীনতার
পক্ষ
২। স্বাধীনতার
বিপক্ষ বা বিপক্ষে কাজ করা অথবা মানবতা বিরোধী/যুদ্ধাপরাধী পক্ষ । উপরোল্লেখিত
চারটি ক্যান্সার সম সমস্যাকে এবার যদি দেখা যায় এভাবে যে , স্বাধীনতার পক্ষের
লোকজন আবার স্বাধীনতার বিপক্ষের লোকদের নিয়ে ব্যাক্তি স্বার্থের কায়েমি রাজনীতি করার কারনে এই চারটি সমস্যার জন্ম তখন বুঝতে আর বাকি থাকেনা যে সত্যিই বাংলাদেশ অদ্ভূত এক উটের পিঠে সওয়ার হয়েছে । গত
চল্লিশ বছরে তা আজ এমন অবস্থাতে এসে দাড়িয়েছে যে একে অনিবার্য আরেক স্বশস্ত্র সংগ্রামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে । ফলাফল
প্রাণহাণী , ধংষ , আর পিছিয়ে যাওয়া ।
গত
দশ বছর ধরে জাতীয় জীবনে একটি অসুস্থ ধারা চলে আসছে তা হলো মুক্তিযুদ্ধকে ব্যাবহার করে ক্ষমতার বৈতরনি পারি দিতে নিজ মতের বাইরের সবাইকে রাজাকার ট্যাগ দেয়া । এই
অভ্যাসটি অত্যান্ত ভয়ংকর এক খেলা যার তুলনা করা চলে দূধারী ফলার দুই প্রান্তে ধরে আছেন দুই পক্ষ । ফলাফল,
ঘায়েল দুপক্ষকেই হতে হবে ।
আমি
খুব খুশি হতাম যদি স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকারকারী , বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতা বিরোধী কাজ সংঘটনকারী সকল ব্যাক্তি বা প্রতিষ্টান কে অন্তত দুশো বছরের জন্য বাংলাদেশের আইন প্রনয়নকারী, জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী , রাষ্ট্র ব্যাবস্থ্যার নীতিনির্ধারণী পদের আসীন কিংবা কোন বাহিনীতে যোগদান , আইন করে বন্দ করে
দেয়া হতো কিন্তু তা হয়নি । চল্লিশ
বছর পর আজ তা করতে গেলে আমাদের জাতীয় অস্তিত্ত্ব নিয়ে এক অসুখকর পরিস্থিতির উদ্ভব হবে তাই আমি আহবান করছি সকল বাংলাদেশিকে যার যার যায়গা থেকে আশু এই মহা প্রলয় রুখে দিতে কাজ করার জন্য । তবে
মনে রাখা জরুরী যে এখনো আমরা সেই সব রাজনীতিক দল ও পালের গোদাদের
স্পষ্ট ভাবে ঘোষণা দিয়ে আমাদের জাতীয় রাজনীতে অবাঞ্চিত/অগ্রহণযোগ্য/নিষিদ্ধ করে রাখতে পারি । এই
লক্ষ্যে প্রধান সব দলকে জাতীয় ঐক্যে আসতে বাধ্য করতে কাজ করতে হবে । জনগণকে
তাদের জাতীয় ভোটাধিকার প্রয়োগের বেলা স্বাধীনতা যুদ্ধে অপরাধ সংঘটনকারীদের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে মতামত প্রদানের সুযোগ রাখা হোক ।
সেই
সাথে স্বাধীনতা উত্তর প্রজন্মের সাথে যে কোন প্রকার বিবেধ , শ্রেণী বৈষম্য , অন্যায় যা জাতীর মাঝে বিবেধ আনয়ন করে এমন সব কিছু নিষিদ্ধ করা হোক এবং এসব অগ্রহণযোগ্য কাজের শাস্তি ৩০ বছরের জামিনহীন জেল বিধান রাখা হোক যাতে করে মানুষের মনে এমন চিন্তা না আসতে পারে আর কেউ তা করলেও যেনো সে শাস্তি পাবার পর আর কিছু করার যোগ্যতা না রাখে ।