যে
বিছানাতে আমি সটান হয়ে মাঝ রাত থেকে দিন দুপুর পর্যন্ত শুয়ে থাকি , সেখান থেকে পায়ের দিকের একমাত্র
জানালা করে ,সামনের রাস্তার ওপারের বাড়ীটির ছাদে ,প্রতি রাতে একটি পাখি একা বসে থাকে । মাঝে
মাঝে আরো একটি পাখি আসে তবে সারাটা সময় ধরে থাকে না, একা পাখি আবারো একা হয়ে যায় । আমি
আর পাখি বিনা ভাব বিনিময়ে অপেক্ষাতে থাকি । পাখির
অপেক্ষার গল্প কল্পনা করে নেই আর আমার অপেক্ষা নাই
বা বললাম আজ ...
আমি
উঠ বস করি পাখিটির নড়া-চড়া দেখতে , এটি পাখিতো ! তা যাচাই করতে , যখন অন্য পাখিটি আসে তখন দেখতে চাই তারা কি ডানা ঝাপটে কিংবা ঠোট ঠুকে কিছু বলে কি না, অথবা প্রহরীর পায়চারী করলো কি না ...
সময়
সময় ব্যাস্ত হই এই ভেবে যে বৃষ্টি এলে বা ঠান্ডা পড়লে কি করবে ? পাখি থাকে নিরব অপেক্ষায় !
আমি
ঘুমিয়ে যাই, দিনের বেলা আমি আর খুজতে যাইনা কোথায় আছে পাখিটি কিন্তু প্রতি রাতে জানালার পর্দা সড়িয়ে দেখি
সে আছে কি না । মন
চায় সে থাকুক আর আমি গাই সে যে বসে আছে...
প্রায়
সকালেই ঘুম থেকে উঠে আধ নাঙ্গা দেহে প্রথমেই জানালায় পাখিটিকে খুজতে চোখ রাখি , জানি থাকবেনা তবুও ...
যেদিন
চাদের আলো থাকে সেদিন আমি তার রুপ দেখি খুটিয়ে খুটিয়ে আর চাদ পালালে তার অস্তিত্ত্ব কল্পনা করি চোখের আলোতে ...আমার ক্লান্ত চোখ কি কারনে যেনো কয়েক ফোটা জল ফেলে দেয়, বিনা কারনেই । মেঘের
রং, স্ট্রিট ল্যাম্প আর দালানের রং এবং অন্ধকার মিলে অদ্ভুত এক পৃথিবীর গোপন জানালা তৈরী হয় সে সময়, প্রতিরাতে । আমি
আর পাখি এবং আমাদের অন্য আরেকটি ভোর থাকে অপেক্ষায় ।
গত
কয়েকদিন থেকে অন্য পাখিটি নিয়ম করে আসছে । আমি
প্রার্থনার জপের মতো বলে যাই কাছাকাছি আয় কিন্তু তারা আসেনা মনে হয় রেল লাইন সমান্তরাল প্রমানের চেস্টায় দুজন পণ করেছে । মাঝে
মাঝে আমার জানালা করে দেখার সীমার বাইরে চলে যায় আমি চোখ কুচকে খুজি ওদের ... গতকাল একটি আরেকটির পিছে প্রহরীর মতো করে হেটে এ মাথা থেকে
আরেক মাথায় হেটেছে । একা
পাখি আবারো একা হয়ে বসে আছে ।
আমি
ভাবি বেকুব পাখি কেনো যায়না তার মা বাবা কিংবা সঙ্গি-সাথিদের কাছে ?
আমার
সকালে পর্দা সড়াতেই দেখি অনেক গুলো সাদা পালক । ঝরে
পড়া পালকের গতিপথ আমার জানালা ধরে নিচে নেমে গেছে ...
আমি
বলি, এসোনা এতো কাছে এসোনা ... এতো প্রেম সবার সইবেনা ...