“ইয়ে খেল আখির কিসলিয়ে, মন নাহি উবতা,
কোয়ি কোয়ি বার ত খেল চুকে হ্যা্
ইয়ে হাম আপনি জিন্দেগি মে,
খেল খেলা হ্যায়, খেলতে রাহে হ্যায়,
নাতিজা ফির ওয়াহি এক জ্যায়সা,
কিয়া বাকি রাহতা হ্যায়, হাসিল কিয়া হোতা হ্যায়,
জিন্দেগি হার এক দুসরে কে আন্ধেরি মে হ্যায়,
- গুলজার।
আবু তাহের তারেক কে আমি চিনি ২০০০ সাল থেকে। স্বল্পভাষী, অন্তঃমুখি ফুলতলি ঘরাণার শান্তশিষ্ঠ একজন মানুষ হিসেবে তাকে দেখেছি। কলেজে জীবনে যোগাযোগ কমে এলেও ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় আবার যোগাযোগ হয়। সেই সময়ে তার সাথে চিন্তার খুবই সংক্ষিপ্ত কিছু বিনিময় বা যোগাযোগ হয়, আমি তখন তার সেই চিন্তার ঝড় ধরতে পারিনি, প্রেজুডিস ও ইগনোরেন্সের কারনে। আবারও যোগাযোগ কেটে যায়। এক সময় তাকে ইউকে’তে দেখতে পাই কিন্তু যোগাযোগ করা হয়ে উঠেনি। অতঃপর সে পর্তুগাল চলে যায় এবং তার সাথে আমার কিছু যোগাযোগ হয়। ভাষা নিয়ে বছর দুই আগে তাকে আমার রেডিও শোতে ইনভাইট করেছিলাম। আমি তাকে তারেক বলেই সম্বোধন করি তাই তাকে তারেক বলেই লিখছি।
সম্প্রতি তারেকের নিজের ফেইসবুক পোষ্ট থেকে জানতে পেরেছি তারেক এবং তারেকের পরিবারকে হেনস্থা করা হচ্ছে। তারেক কে খুনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারেক কে নাস্তিক ঘোষণা করা হচ্ছে। তার পরিবারকে পাবলিকলি, সামাজিক ভাবে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টা দৃশ্যমান।
তারেক ও তার পরিবারকে ঘিরে যে অবস্থা চলছে, যা তারেক আমাদের জানিয়েছে তাকে ৩ ভাবে দেখা যায়,
১। তারেক স্বেচ্ছায় এমন পাবলিসিটি করছে।
২। বাংলাদেশে ধর্ম কেন্দ্রিক যে বিষবাষ্প লালন হচ্ছে, অজ্ঞানতার যে মাতাল হাওয়া বইছে তারই প্রতিফলন এই ঘটনা।
৩। সরকারের বৈরি ভালোবাসা।
তারেকের স্বেচ্ছায় এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি সে পর্তুগালে তার সেটেলমেন্ট নিয়ে পাবলিকলি জানিয়েছে। সে তার বা-মা’র জন্য সে যথেষ্ট। তারেকের বাবা তাদের সমাজে একজন সম্মানিত, প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তি। তাদের মাইগ্রেট হবার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়নি। তারেক নিজেকে পাবলিসিটি দেয়ার জন্য এমন করেছে এমন ভাবারও সুযোগ নেই। এই গেইম খুবই ডেঞ্জারাস, তারেক বুদ্ধিমান মানুষ, এমইন কাঁচা কাজ সে করার কথা নয়। একজন লেখক বা কবি বা আর্ট ও কালচারের মানুষ বেচে থাকেন তাদের কাজ ও প্রচারের মধ্য দিয়ে, এটা তাদের ডিজায়ার হিসেবে থাকা অন্যায় নয় তাই বলে কেউ নিজ ঘরে আগুন দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষ্ন করবেন এমন ভাবা শুধুই একজন কন্সপিরেসি থিওরি এডিক্টেড মানুষের পক্ষে সম্ভব। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম তারেক এমন করছে, তখন আমার প্রশ্ন, ইহকালের, পরকালের পণ্ডিতেরা কি তাসলিমা নাসরিনের সাথে যা করেছেন আর তার হাত ধরে তাসলিমা নাসরিন যেখানে পৌছেছেন তাতে কি তাদের দায় ভুলে গিয়েছেন? তারেক কে বিনা কারনে, বিনা যুক্তিতে কেন এমন হীন গেমের দিকে আপনারা যেতে দিচ্ছেন, আমিতো এতে তারেকের চেয়ে তাদের দায় বেশি দেখি। (ভুলে যাবেন, আমি হাইপোথিসিস দাড় করাচ্ছি, ফ্যাক্ট বলছিনা, ডিফারেন্সিয়াল এনালিসিসে এটা জরুরি)
তারেক কে? তারেক কি করে? এই বিষয়ে তারেক নিজেই লিখেছে, খুবই দৃঢ় প্রত্যয় এবং বিনয়ের সাথে জানিয়েছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। দেখতে পারেন এই লিঙ্কে https://www.facebook.com/tarek.ahmed.520900/posts/1690918437716026
আমার চোখে তার এই বিষয়ক প্রথম লিখাটি পড়ার পরই আমার ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখেছিলাম, কিন্তু যেভাবে মানুষ এই বিষয়কে নিয়ে যাচ্ছে সত্যের পক্ষে, যুক্তির পক্ষে দাড়াবার।
তারেক নিজে বলছে, সে নাস্তিক নয়। আপনি কে তাকে নাস্তিক ঘোষণা করার? কি অথরিটি রয়েছে আপনার? কি যোগ্যতা আছে আপনার? ইসলামিক জুরিস্প্রুডেন্ট যে স্টেপ ফলো করে ইনসাফের জন্য আপনারা কি তা ফলো করেছেন? আপনারা কি তার লিখা, কনটেক্সট নিয়ে তার সাথে কথা বলেছেন? তাকে ডিফেন্ড করার সুযোগ দিয়েছে? আপনারা কি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যেয়ে তার কাজের জন্য তার পরিবারের মানুষদের হেনস্থা করছেন, তা কি দেশীয় বা ইসলামিক আইনে বৈধ?
বাংলাদেশ ইজ আ ল্যান্ড অব হিপোক্রেট। এই রাষ্ট্রের প্রধান থেকে ধরে অতি নিন্ম স্থরে যে মানুষটি কাজ করে তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোভী, স্বার্থান্ধ, জ্ঞানপাপী, বকধার্মিক। সে নিজে যা জানেনা তার উপর তার পান্ডিত্য জাহির করতে সে মরিয়া হয়ে থাকে। জানিনা, বুঝিনা বলতে তাদের কন্সটিপেশন হয়, টাংসিল হয়, বোবায় ধরে।
খুঁজে দেখুন, আপনার মহল্লার ইমাম, মুয়াজ্জিন, পাশের মাদ্রাসার শিক্ষকের একাডেমিক এক্সিলেন্সির খবর, ক্লাসের কোন লেভেলের ছাত্র ছিলো বা তার চিন্তায় সে কতোটা ডিপ যেতে পারতো নাকি করতে , পড়তে হয় তাওই করি বা পড়ি টাইপের বা এভারেজ পাশ এক মহাপন্ডিত তারা। চর্ম ও যৌন রোগের ডাক্তার যদি আপনার ওপেন হার্ট সার্জারী করতে আসেন তখন যেভাবে আপনি সুস্থ হলে তার চিকিৎসা প্রত্যাখান করবেন একই ভাবে যে যেই বিষয়ে (ধর্ম, রাজনীতি, রাষ্ট্র ইত্যাদি) দক্ষতা , অভিজ্ঞতা নেই তার সিদ্ধান্ত তেমন প্রত্যাখান করবেন, এটা হলো কমন সেন্স।
তারেক যা লিখে তার অনেক কিছুই আমি একমত না। তারেক সর্ব জ্ঞানের একমাত্র জবাব নয়। তারেকের কাছে একটি গিফট আছে, সে নিজে নিজের মতো করে ভাবতে চায়, খুজতে চায়, থিওরি দাড় করাতে চায়, প্রশ্ন করে। এই মহা গুণ সকলের থাকা উচিত। আপনার নাই কেন তা নিয়ে ভাবুন।
ইতিহাস সাক্ষি যারাই ভেবেছেন, কিছু মানুষ হামেশা ছিলো তাদের আক্রমন করতে। কেন? সেই দূর্বল মানুষগুলো ভয়ে থাকতো তাদের এক্সপোজ হয়ে যাবার। তারেক যা লিখছে তার সমালোচনা করুন, আদার সাইড এক্সপোজ করুন। তাকে চ্যালেঞ্জ করুন। যদি এমন না করে কাউকে গুম করে দিতে চান, অবসিলিউট করে দিতে চান, কি এচিভ করবে সমাজ? কি লাভ হবে আপনার? আপনি একজন মর্দে মুজাহিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন? নিজের প্রচার, প্রসার হবে? এমন ভেবে থাকলে আপনি কি তখন রিয়ায় আক্রান্ত হলেন না?
বাংলাদেশে বেশীর ভাগ মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, সংস্থা, ক্লাবের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক দূর্নিতিবাজ, চোর বা চোর ছিলো, তাদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে আপনারা বসে কখনো শুনিনা আপনাদের ঈমান জেগে উঠতে, মোসাহেবি করতে করতে হাতের দাগ মুছে দেন আপনারা! তারেকের পেছনে না লেগে তার সাথে আলোচনায় আসুন। প্রয়োজনে তার সাথে মোবাহালা করুন যদি আল্লাহর উপরে আপনার যথেষ্ট বিশ্বাস অবশিষ্ট থাকে। কারও নামে মামলা দিয়ে, হামলা করে, কারও পরিবারকে হেনস্থা করে কি পাবেন? তারেকের মা হয়তো জানেনই না তারেক কি লিখে, কি ভাবে? কিন্তু তার মা’কে পাড়ার চাচি, খালারা কথা শুনাতে ছাড়বেন না যখন আপনারা এই সব ধর্মগাথা ভাইরাল করবেন। বাদ দেন এসব।
বাংলাদেশে, পাকিস্তানে, ভারতে একজন নাস্তিককে সমাজের সবচেয়ে খারাপ হিসেবে দেখা হয়। এই ভাবনা সমাজ মানূষের মাথায় প্রোথিত করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অথরিটি ইষ্টাব্লিষ্ট করতে প্রশ্নহীন ধর্ম বিশ্বাসের শর্ত জুড়ে দিয়েছে। প্রশ্নের উত্তরই একটি নতুন ধর্মের প্রথম সোপান। কিন্তু মানুষ আজ প্রশ্ন ভুলে ভায়োলেন্সের পথকে জিহাদ ভেবে বসে আছে। আপনি নবীকে ভালোবাসেন, আল্লাহ কে পেয়ার করেন কিন্তু আপনার ভালোবাসায় উইশডম নাই কেন? ভেবে দেখেছেন একটা ইয়াং ছেলে, ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে বা যে কেউ কেন ধর্মগুলোর ব্যাপারে উদাসীন? কেন তারা সংশয়ে থাকে? এদের জন্য আপনারা কাজের কাজ কি করেছেন? কতো জনের সাথে ডায়ালগে এসেছেন? আসমান থেকে আল্লাহ কখনো নেমে আসেন না তাই আপনাকেই এসব ভাবতে হবে, এসবের সমাধান খুজতে হবে, কমন সেন্স দিয়ে, অভিজ্ঞতা দিয়ে আর যদি চান আপনার ধর্মীয় স্ক্রিপচার দিয়ে খুজতে পারেন তবে ভুলে যাবেন মুচি বা চামার হয়ে অপারেশন করতে যাবেন না।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চোর, ডাকাত, লুটেরা, ভন্ড, জালিম, জাহিল সরকার। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার অপমান এই সরকার। এরা প্রশ্নকে নির্মূল করতে চায়। তাই তারা একদল জানোয়ার তৈরি করেছে যারা এদের কে ছাত্রলীগ বা যুবলীগ বলে পরিচয় দেয়। যেখানেই আপনি প্রশ্ন তুলবেন তারা হাজির হবে বিন বুলায়ি মেহমানের মতো। তারা আপনাকে ন্যায়, সঠিক বা সত্যের জ্ঞান দিতে আসবে। যা সরকার শুনতে চায় তা প্রতিষ্ঠিত করতে জান লড়িয়ে দেবে এর বিনিময়ে রাষ্ট্র লুন্ঠনে এরা সিকি ভাগ লাভ করবে। প্রত্যেক সাহসী, সচেতন দেশপ্রেমিক আজ যার যার অবস্থান থেকে লিখছে, বলছে, কিছু করছে। ভয়ে ভয়ে, গোপনে, নিচু স্বরে। তারেকও মাঝে মাঝে কিছু কিছু লিখে, কোন ভাবেই তা এনএসএফ বা ডিজিএফআই বা র্যাবের নজর কারার মতো কিছু না। তারেক ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করেনা। সে একজন মানুষ হিসেবে প্রতিক্রিয়া দেয় মাত্র। তাই বলছি সরকার বাহাদূর এখন লুন্ঠনে মশগুল তারেক কে নজর দেয়ার সময় কোথায়?
আমি তারেকের চিন্তার, প্রশ্ন করার স্বাধীনতার পক্ষে বলিষ্ট ভাবে দাড়াতে চাই, বলতে চাই আমি তার অধিকারের পক্ষে বলতে চাই। তারেক মানুষ, সে ভুল করবে, সে উত্তর খুঁজে নেবে। তারেক কে যেন তাকে বা তার স্বজন কে রক্ষায় কাতর কন্ঠে বা নমনীয় শব্দে লিখতে না হয় আমি নাস্তিক নই, আমি একজন আস্তিক। আমি মাদ্রাসায় পড়েছি, পড়িয়েছি, আমি নবী মুহাম্মদ (স) কে ভালোবাসি। মনে আছে, বিশ্বজিৎ কুপের মুখে মৃত্যের আগ পর্যন্ত বলছিলো, আমিতো হিন্দু… খুনিরা জানতোও না… তারেক জীবিত থাকা অবস্থায় বলছে, জান বাচানোর আকুতি নিয়ে বলছে, আমিও মুসলমান তবে হুয়তো তোমার মতো নই।
আমরা যারা প্রশ্ন করি, সন্দেহ করি, অল্টারনেটিভ থট সামনে আনতে চাই, তার পেছনে এই সমাজ সংসার। রাষ্ট্রের দায় এড়িয়ে আমাদের মারতে আসলে এই সমাজ, রাষ্ট্র একদিন মনুষ্যহীন হয়ে পড়বে। তখন আপনি বুনো শুয়োরের সামনে দাঁড়িয়ে চেচিয়ে চেচিয়ে বলবেন, আমরা আশরাফুল মাখলুকাত!
সম্প্রতি তারেকের নিজের ফেইসবুক পোষ্ট থেকে জানতে পেরেছি তারেক এবং তারেকের পরিবারকে হেনস্থা করা হচ্ছে। তারেক কে খুনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারেক কে নাস্তিক ঘোষণা করা হচ্ছে। তার পরিবারকে পাবলিকলি, সামাজিক ভাবে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টা দৃশ্যমান।
তারেক ও তার পরিবারকে ঘিরে যে অবস্থা চলছে, যা তারেক আমাদের জানিয়েছে তাকে ৩ ভাবে দেখা যায়,
১। তারেক স্বেচ্ছায় এমন পাবলিসিটি করছে।
২। বাংলাদেশে ধর্ম কেন্দ্রিক যে বিষবাষ্প লালন হচ্ছে, অজ্ঞানতার যে মাতাল হাওয়া বইছে তারই প্রতিফলন এই ঘটনা।
৩। সরকারের বৈরি ভালোবাসা।
তারেকের স্বেচ্ছায় এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি সে পর্তুগালে তার সেটেলমেন্ট নিয়ে পাবলিকলি জানিয়েছে। সে তার বা-মা’র জন্য সে যথেষ্ট। তারেকের বাবা তাদের সমাজে একজন সম্মানিত, প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তি। তাদের মাইগ্রেট হবার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়নি। তারেক নিজেকে পাবলিসিটি দেয়ার জন্য এমন করেছে এমন ভাবারও সুযোগ নেই। এই গেইম খুবই ডেঞ্জারাস, তারেক বুদ্ধিমান মানুষ, এমইন কাঁচা কাজ সে করার কথা নয়। একজন লেখক বা কবি বা আর্ট ও কালচারের মানুষ বেচে থাকেন তাদের কাজ ও প্রচারের মধ্য দিয়ে, এটা তাদের ডিজায়ার হিসেবে থাকা অন্যায় নয় তাই বলে কেউ নিজ ঘরে আগুন দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষ্ন করবেন এমন ভাবা শুধুই একজন কন্সপিরেসি থিওরি এডিক্টেড মানুষের পক্ষে সম্ভব। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম তারেক এমন করছে, তখন আমার প্রশ্ন, ইহকালের, পরকালের পণ্ডিতেরা কি তাসলিমা নাসরিনের সাথে যা করেছেন আর তার হাত ধরে তাসলিমা নাসরিন যেখানে পৌছেছেন তাতে কি তাদের দায় ভুলে গিয়েছেন? তারেক কে বিনা কারনে, বিনা যুক্তিতে কেন এমন হীন গেমের দিকে আপনারা যেতে দিচ্ছেন, আমিতো এতে তারেকের চেয়ে তাদের দায় বেশি দেখি। (ভুলে যাবেন, আমি হাইপোথিসিস দাড় করাচ্ছি, ফ্যাক্ট বলছিনা, ডিফারেন্সিয়াল এনালিসিসে এটা জরুরি)
তারেক কে? তারেক কি করে? এই বিষয়ে তারেক নিজেই লিখেছে, খুবই দৃঢ় প্রত্যয় এবং বিনয়ের সাথে জানিয়েছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। দেখতে পারেন এই লিঙ্কে https://www.facebook.com/tarek.ahmed.520900/posts/1690918437716026
আমার চোখে তার এই বিষয়ক প্রথম লিখাটি পড়ার পরই আমার ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখেছিলাম, কিন্তু যেভাবে মানুষ এই বিষয়কে নিয়ে যাচ্ছে সত্যের পক্ষে, যুক্তির পক্ষে দাড়াবার।
তারেক নিজে বলছে, সে নাস্তিক নয়। আপনি কে তাকে নাস্তিক ঘোষণা করার? কি অথরিটি রয়েছে আপনার? কি যোগ্যতা আছে আপনার? ইসলামিক জুরিস্প্রুডেন্ট যে স্টেপ ফলো করে ইনসাফের জন্য আপনারা কি তা ফলো করেছেন? আপনারা কি তার লিখা, কনটেক্সট নিয়ে তার সাথে কথা বলেছেন? তাকে ডিফেন্ড করার সুযোগ দিয়েছে? আপনারা কি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যেয়ে তার কাজের জন্য তার পরিবারের মানুষদের হেনস্থা করছেন, তা কি দেশীয় বা ইসলামিক আইনে বৈধ?
বাংলাদেশ ইজ আ ল্যান্ড অব হিপোক্রেট। এই রাষ্ট্রের প্রধান থেকে ধরে অতি নিন্ম স্থরে যে মানুষটি কাজ করে তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোভী, স্বার্থান্ধ, জ্ঞানপাপী, বকধার্মিক। সে নিজে যা জানেনা তার উপর তার পান্ডিত্য জাহির করতে সে মরিয়া হয়ে থাকে। জানিনা, বুঝিনা বলতে তাদের কন্সটিপেশন হয়, টাংসিল হয়, বোবায় ধরে।
খুঁজে দেখুন, আপনার মহল্লার ইমাম, মুয়াজ্জিন, পাশের মাদ্রাসার শিক্ষকের একাডেমিক এক্সিলেন্সির খবর, ক্লাসের কোন লেভেলের ছাত্র ছিলো বা তার চিন্তায় সে কতোটা ডিপ যেতে পারতো নাকি করতে , পড়তে হয় তাওই করি বা পড়ি টাইপের বা এভারেজ পাশ এক মহাপন্ডিত তারা। চর্ম ও যৌন রোগের ডাক্তার যদি আপনার ওপেন হার্ট সার্জারী করতে আসেন তখন যেভাবে আপনি সুস্থ হলে তার চিকিৎসা প্রত্যাখান করবেন একই ভাবে যে যেই বিষয়ে (ধর্ম, রাজনীতি, রাষ্ট্র ইত্যাদি) দক্ষতা , অভিজ্ঞতা নেই তার সিদ্ধান্ত তেমন প্রত্যাখান করবেন, এটা হলো কমন সেন্স।
তারেক যা লিখে তার অনেক কিছুই আমি একমত না। তারেক সর্ব জ্ঞানের একমাত্র জবাব নয়। তারেকের কাছে একটি গিফট আছে, সে নিজে নিজের মতো করে ভাবতে চায়, খুজতে চায়, থিওরি দাড় করাতে চায়, প্রশ্ন করে। এই মহা গুণ সকলের থাকা উচিত। আপনার নাই কেন তা নিয়ে ভাবুন।
ইতিহাস সাক্ষি যারাই ভেবেছেন, কিছু মানুষ হামেশা ছিলো তাদের আক্রমন করতে। কেন? সেই দূর্বল মানুষগুলো ভয়ে থাকতো তাদের এক্সপোজ হয়ে যাবার। তারেক যা লিখছে তার সমালোচনা করুন, আদার সাইড এক্সপোজ করুন। তাকে চ্যালেঞ্জ করুন। যদি এমন না করে কাউকে গুম করে দিতে চান, অবসিলিউট করে দিতে চান, কি এচিভ করবে সমাজ? কি লাভ হবে আপনার? আপনি একজন মর্দে মুজাহিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন? নিজের প্রচার, প্রসার হবে? এমন ভেবে থাকলে আপনি কি তখন রিয়ায় আক্রান্ত হলেন না?
বাংলাদেশে বেশীর ভাগ মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, সংস্থা, ক্লাবের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক দূর্নিতিবাজ, চোর বা চোর ছিলো, তাদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে আপনারা বসে কখনো শুনিনা আপনাদের ঈমান জেগে উঠতে, মোসাহেবি করতে করতে হাতের দাগ মুছে দেন আপনারা! তারেকের পেছনে না লেগে তার সাথে আলোচনায় আসুন। প্রয়োজনে তার সাথে মোবাহালা করুন যদি আল্লাহর উপরে আপনার যথেষ্ট বিশ্বাস অবশিষ্ট থাকে। কারও নামে মামলা দিয়ে, হামলা করে, কারও পরিবারকে হেনস্থা করে কি পাবেন? তারেকের মা হয়তো জানেনই না তারেক কি লিখে, কি ভাবে? কিন্তু তার মা’কে পাড়ার চাচি, খালারা কথা শুনাতে ছাড়বেন না যখন আপনারা এই সব ধর্মগাথা ভাইরাল করবেন। বাদ দেন এসব।
বাংলাদেশে, পাকিস্তানে, ভারতে একজন নাস্তিককে সমাজের সবচেয়ে খারাপ হিসেবে দেখা হয়। এই ভাবনা সমাজ মানূষের মাথায় প্রোথিত করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অথরিটি ইষ্টাব্লিষ্ট করতে প্রশ্নহীন ধর্ম বিশ্বাসের শর্ত জুড়ে দিয়েছে। প্রশ্নের উত্তরই একটি নতুন ধর্মের প্রথম সোপান। কিন্তু মানুষ আজ প্রশ্ন ভুলে ভায়োলেন্সের পথকে জিহাদ ভেবে বসে আছে। আপনি নবীকে ভালোবাসেন, আল্লাহ কে পেয়ার করেন কিন্তু আপনার ভালোবাসায় উইশডম নাই কেন? ভেবে দেখেছেন একটা ইয়াং ছেলে, ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে বা যে কেউ কেন ধর্মগুলোর ব্যাপারে উদাসীন? কেন তারা সংশয়ে থাকে? এদের জন্য আপনারা কাজের কাজ কি করেছেন? কতো জনের সাথে ডায়ালগে এসেছেন? আসমান থেকে আল্লাহ কখনো নেমে আসেন না তাই আপনাকেই এসব ভাবতে হবে, এসবের সমাধান খুজতে হবে, কমন সেন্স দিয়ে, অভিজ্ঞতা দিয়ে আর যদি চান আপনার ধর্মীয় স্ক্রিপচার দিয়ে খুজতে পারেন তবে ভুলে যাবেন মুচি বা চামার হয়ে অপারেশন করতে যাবেন না।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চোর, ডাকাত, লুটেরা, ভন্ড, জালিম, জাহিল সরকার। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার অপমান এই সরকার। এরা প্রশ্নকে নির্মূল করতে চায়। তাই তারা একদল জানোয়ার তৈরি করেছে যারা এদের কে ছাত্রলীগ বা যুবলীগ বলে পরিচয় দেয়। যেখানেই আপনি প্রশ্ন তুলবেন তারা হাজির হবে বিন বুলায়ি মেহমানের মতো। তারা আপনাকে ন্যায়, সঠিক বা সত্যের জ্ঞান দিতে আসবে। যা সরকার শুনতে চায় তা প্রতিষ্ঠিত করতে জান লড়িয়ে দেবে এর বিনিময়ে রাষ্ট্র লুন্ঠনে এরা সিকি ভাগ লাভ করবে। প্রত্যেক সাহসী, সচেতন দেশপ্রেমিক আজ যার যার অবস্থান থেকে লিখছে, বলছে, কিছু করছে। ভয়ে ভয়ে, গোপনে, নিচু স্বরে। তারেকও মাঝে মাঝে কিছু কিছু লিখে, কোন ভাবেই তা এনএসএফ বা ডিজিএফআই বা র্যাবের নজর কারার মতো কিছু না। তারেক ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করেনা। সে একজন মানুষ হিসেবে প্রতিক্রিয়া দেয় মাত্র। তাই বলছি সরকার বাহাদূর এখন লুন্ঠনে মশগুল তারেক কে নজর দেয়ার সময় কোথায়?
আমি তারেকের চিন্তার, প্রশ্ন করার স্বাধীনতার পক্ষে বলিষ্ট ভাবে দাড়াতে চাই, বলতে চাই আমি তার অধিকারের পক্ষে বলতে চাই। তারেক মানুষ, সে ভুল করবে, সে উত্তর খুঁজে নেবে। তারেক কে যেন তাকে বা তার স্বজন কে রক্ষায় কাতর কন্ঠে বা নমনীয় শব্দে লিখতে না হয় আমি নাস্তিক নই, আমি একজন আস্তিক। আমি মাদ্রাসায় পড়েছি, পড়িয়েছি, আমি নবী মুহাম্মদ (স) কে ভালোবাসি। মনে আছে, বিশ্বজিৎ কুপের মুখে মৃত্যের আগ পর্যন্ত বলছিলো, আমিতো হিন্দু… খুনিরা জানতোও না… তারেক জীবিত থাকা অবস্থায় বলছে, জান বাচানোর আকুতি নিয়ে বলছে, আমিও মুসলমান তবে হুয়তো তোমার মতো নই।
আমরা যারা প্রশ্ন করি, সন্দেহ করি, অল্টারনেটিভ থট সামনে আনতে চাই, তার পেছনে এই সমাজ সংসার। রাষ্ট্রের দায় এড়িয়ে আমাদের মারতে আসলে এই সমাজ, রাষ্ট্র একদিন মনুষ্যহীন হয়ে পড়বে। তখন আপনি বুনো শুয়োরের সামনে দাঁড়িয়ে চেচিয়ে চেচিয়ে বলবেন, আমরা আশরাফুল মাখলুকাত!