Saturday 1 December 2018

হনুমান 'দলিত' ছিলেন, যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্য। আর্য্য নাকি দলিত প্রশ্নে বিভক্ত ভারতবাসী।



হিন্দু মাইথোলজি মতে তিনি সাগর লঙ্ঘন করেছেন, গন্ধমাদন উৎপাটিত করেছেন, সূর্যকে বগলে চেপে ধরেছেন, সাত লক্ষ রাক্ষস বধ করেছেন, রামায়ণের কোনও কোনও সংস্করণে রাবণের রথের চূড়াও চিবিয়েছেন, তবু এমন উটকো ঝামেলায় পড়বেন, কে জানত!

পরশুরামের ‘হনুমানের স্বপ্ন’-তে তিনি সঙ্গিনীর খোঁজে ব্যাকুল, সুকুমার রায়ের ‘লক্ষ্মণের শক্তিশেল’-এ গন্ধমাদন চাপা দিয়েছেন যমরাজকে। কিন্তু কে জানত, তিনি দলিত না ব্রাহ্মণ, আর্য না অনার্য, নাকি নিছক বনবাসী— তা নিয়ে সরগরম হবে ভোটবাজার!

মহাসঙ্কটে বজরঙ্গবলী!

যোগী আদিত্যনাথ যেই না বলেছেন, হনুমান ‘দলিত’— তুলকালাম শুরু। ব্রাহ্মণ মহাসভা আইনি নোটিস দিয়েছে। যোগীর ‘সদবুদ্ধি’ কামনায় যজ্ঞও হচ্ছে। রামভক্ত হনুমান নিয়ে ভোটের মুখে বিষম খেয়ে রুষ্ট ‘রামপন্থী’ দলের সভাপতি অমিত শাহ। বিজেপি-সেনারা বার্তা পেয়েছেন, মাঠে নামতে হবে। যে কোনও মূল্যে ঘোচাতে হবে হনুমানের ‘দলিত’ তকমা।

পবনপুত্রের জাত নিয়ে ব্যাখ্যাও তাই জারি।

মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার, বর্তমানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিংহ ফুৎকারে ওড়ালেন যোগীর কথা। বললেন, ‘‘হনুমান দলিত কোনও ভাবেই নন। তিনি আর্য। বাল্মীকি রামায়ণ আর রামচরিতমানস পড়লেই বুঝবেন, সেই সময়ে কোনও জাতিভেদ ছিল না। দলিত, শোষিত, বঞ্চিতও ছিল না। ভগবান রাম ও হনুমান, উভয়েই আর্য ছিলেন।’’

ছত্তীসগঢ়ের আদিবাসী গ্রাম থেকে উঠে আসা নেতা নন্দকুমার সাই। নরেন্দ্র মোদী তাঁকে তফসিলি জনজাতি কমিশনের চেয়ারম্যান করেছেন। তাঁর যুক্তি, হনুমান ‘জনজাতি’। বললেন, ‘‘আমরাও বনবাসী। রামের সেনাতে বানর ছিল, ভালুক ছিল। আমি যেমন কাঁওয়ার সমাজের। হনুমানের গোত্রও বলা আছে। আমার ধারণা, এঁরা সবাই জনজাতি। জঙ্গলেই থাকতেন, ভগবান রামের সঙ্গে বড় লড়াইয়ে গিয়েছেন।’’

তা হলে হনুমান কে?

গবেষকেরা কেউ কেউ বলেছেন, রামায়ণের অনেক আগে ‘হনুমান’ শব্দটি এসেছিল দাক্ষিণাত্যের ভাষা থেকে। তাইল্যান্ডে তিনিই আবার ‘অনুমান’, মালয়েশিয়ায় ‘আন্দোমান’। ‘মাই হনুমান চালিশা’ বইয়ে দেবদত্ত পট্টনায়ক লিখেছেন, জঙ্গলের প্রাণী ও রামের দাস হওয়া সত্ত্বেও হনুমানকে পৈতে দেওয়া হয়েছিল। বাল্মীকি রামায়ণে এ কথা নেই। কিন্তু জাতপাত দানা বাঁধতে শুরু করার পরে পাঁচশো বছর ধরে নানা আঞ্চলিক লেখায় বিষয়টি এসেছে। বলা হয়েছে, নিজের জ্ঞান ও চেষ্টায় হনুমান অর্জন করেন ব্রাহ্মণত্ব। তাঁর হাতে অস্ত্র আছে, ফলে তিনি যোদ্ধা, ক্ষত্রিয়। রামের পতাকা ধরে তিনি দাস, শূদ্রও। আবার পৈতে নিয়ে ব্রাহ্মণও। ‘হনুমানের স্বপ্ন’-তে আছে, পবনপুত্রকে সংসারী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সীতাদেবী বলছেন, ‘‘আমি অনুরোধ করিলে মহর্ষি বশিষ্ঠ উপনয়নসংস্কার দ্বারা তোমায় ক্ষত্রিয় বানাইয়া দিবেন।’’

নানা মুনির নানা মত। কিন্তু ভোটের সময়েই নতুন তোলপাড় কেন? কংগ্রেস বলছে, ‘‘যত্তসব অবান্তর বিতর্ক। ব্যর্থতা ঢাকার কল।’’ নির্বাচন কমিশনে তারা নালিশ জানিয়েছে, রাজস্থানে প্রচারে গিয়ে এ সব বলে শান্তি ভঙ্গ করছেন যোগী। তাঁকে যেন রাজ্যে ঢুকতেই দেওয়া না হয়!

Einstein’s ‘God letter’ for auction




A handwritten 1954 letter by physicist Albert Einstein in which the Nobel laureate is dismissive of religion in general and Judaism in particular is expected to bring a seven-figure price when auctioned by Christie’s in New York City on Dec. 4.


In the so-called God letter, written to philosopher Eric Gutkind, Einstein wrote that the word “God” was “for me nothing but the expression and product of human weaknesses,” while calling the Bible “a collection of venerable but still rather primitive legends.”


Einstein wrote the letter after reading Gutkind’s book “Choose Life: The Biblical Call to Revolt,” a volume urged upon him by Dutch philosopher and mathematician Luitzen Egbertus Jan Brouwer.


Without Brouwer’s “repeated suggestion” that he read the book, Einstein wrote, he would not have engaged with the text because its arguments were “written in a language which is inaccessible to me,” specifically its spiritual references.


According to Peter Klarnet, the Christie’s expert handling the item, Einstein’s letter “is just a remarkable and very, very precise — and quite blunt — expression of his philosophy about religion. More than any of the others he’s written about the subject, he gets to the core of the subject.”


Speaking with Religion News Service, Klarnet said he anticipates a ready market for the document, which the firm gave a “somewhat conservative” estimate as bringing $1 million to $1.5 million.


“I think the level of interest is quite high,” he said. “We would term this a ‘masterpiece’ item as it stands with other important properties in the last 10 to 20 years.”


In 2002, Christie’s sold one of two copies of the physicist’s 1939 letter to then-U.S. President Franklin D. Roosevelt, warning of Nazi Germany’s plans to develop atomic weaponry. That letter sold for $2 million, and since then interest in science-related items, such as first-edition copies of Sir Isaac Newton’s “Principia” and Charles Darwin’s “The Origin of Species,” has grown, according to Klarnet.


Along with the 1939 Einstein-Roosevelt letter, Klarnet noted the more than $6 million paid in 2013 for a letter Francis Crick wrote to his son after the discovery of the structure of DNA.


The Christie’s sale will come less than a month after another Einstein letter, in which he wrote in 1922 about his fears of growing anti-Semitism in his native Germany, sold at an auction in Israel for $32,000.


In the Gutkind letter, Einstein discussed his connection to the Jewish people — “to whom I gladly belong,” he wrote — but said, “For me the unadulterated Jewish religion is, like all other religions, an incarnation of primitive superstition.”


Einstein dismissed the idea the Jews were God’s “chosen,” and he denied that they “have any different kind of dignity from all other peoples.”


Klarnet said the subtleties of Einstein’s philosophy were an aspect of the letter that could attract buyers.


“Although Einstein did not believe in an anthropomorphic God (and wrote) that the Bible was a book of stories, he still believed people should have a moral foundation, but it was up to individuals to realize that,” Klarnet said.


“The letter speaks to that and towards Einstein’s antipathy towards chauvinism, that he would place a religion he identified with on a pedestal above anyone else. That’s part of the magic of this letter and why it gets attention when it comes to the public eye,” he added.


Compelling as the Einstein letter may be, one scholar cautions against wielding it as a cudgel for atheism, as noted atheist Richard Dawkins has claimed. Ironically, Dawkins was one of several underbidders when the “God letter” was last auctioned, in 2008 in London.

Sunday 26 August 2018

সৌদি বর্বরতার লাগাম এবং একটি আত্মিক সমাধান। Part-2


সৌদি আরব ইয়েমেনে এই হামলা চালানো বাবদ প্রতি মাসে ২৫ কোটি ডলার ব্যয় করছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এ হিসাব দিয়েছে। অথচ সৌদি আরব নির্মাণ কোম্পানিগুলোর দেনা পরিশোধ করতে পারছে না। অথচ ৬৯.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ করে পৃথিবীর মাঝে সামরিক ব্যায়ের হিসেবে তৃতীয় অবস্থানে অবস্থান করছে। এই আর্টিকেলেই উল্লেখ করেছি ২০১৫ সাল থেকে অদ্যাবদি আমেরিকা ও ব্রিটেন ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলারের অস্ত্র বা মারনাস্ত্র সৌদি আরবকে সরবরাহ করেছে। খুব সহজেই বিবেক-বিবেচনা সম্পন্ন মানুষ অনুধাবন করবেন যে বিশ্ব মোড়লগণ সৌদির বিরোধীতা করবেই না উপরন্তু সব কিছুকে তারা সৌদির জন্য ম্যানেজ করবে। এমন বাস্তবতায় আপনি কি করতে পারেন?




যে সকল দরিদ্র দেশগুলো থেকে লাখ লাখ শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করতে যান তাদেরকে এই মহান সংগ্রামে আহবান করে লাভ নেই উপরন্তু দরিদ্র মানুষ ও দেশগুলোতে এর প্রভাব মানুষের দূর্ভোগ আরও বাড়াবে। কিন্তু আমি আপনাদের সামনে একটি প্রস্তাবনা করতে পারি যা সাপও মারবে আবার লাঠীটিও ভাঙবে না।
আপনি জানেন কি, বিশ্বব্যাপি ১.৭ বিলিয়ন মুসলমানের মাঝে ২০১৭ সালে ২.৪ মিলিয়ন মক্কা আগমন করেন হজ্জ করার জন্য। ২.৪ মিলিয়ন মুসলমানের মাঝে ১.৮ মিলিয়ন মুসলমান ছিলেন সৌদি আরবের বাইরের অঞ্চল বা দেশ থেকে। অপর দিকে একই বছর ৮ মিলিয়ন মানুষ উমরাহ করতে সৌদিতে এসেছিলেন।
আপনি জানেন কি, ২০১৭ সালেই হজ্জের মৌসুম ৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার  এবং উমরাহ খাত থেকে আরও ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার সৌদি ইকনোমিতে যোগ করেছে যা হজ্জ ও উমরাহকে তেলের পর সবচেয়ে লাভ জনক আয়ের উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আপনি জানেন কি, সৌদি সরকার তাদের ভীষণ ২০৩০ পরিকল্পনায় প্রতিবছর ৩০ মিলিয়ন উমরাহ পালনকারিকে আকর্ষিত করতে চাইছে।
আপনি জানেন কি, মক্কা চ্যাম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির মতে সৌদির প্রাইভেট সেক্টরের ২৫-৩০% হজ্জ-উমরার উপর নির্ভরশীল এমনকি আরব রাষ্টগুলোর এভিয়েশন বিজনেসেও এই হজ্জ-উমরা গুরুত্বপূর্ণ পালন করে।
আপনি জানেন কি, সৌদি আরবের ন্যাশনাল রিয়েল এষ্টেট কমিটি আশা করছে হজ্জ-উমরা থেকে আগামি পাঁচ বছরের মাঝে ১৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করতে সক্ষম হবে এবং হজ্জ-উমরা কেন্দ্রিক ১০০০০০ স্থায়ী জব ক্রিয়েট করবে।
উপরের তথ্যগুলোকে যদি একটু সতর্ক ভাবে বিবেচনা করেন তবে সহজেই আপনি আমাদের সাথে একমত হবেন একমাত্র সৌদি আয়ের উৎসে যদি আমরা কম্পন সৃষ্টি করতে পারি তবেই উট পাহাড়ের নিচে আসবে।
এবার আমরা যদি আপনাকে পৃথিবীর কয়েকটি দেশের নাম স্মরণ করিয়ে দেই তবে আপনাদের স্মরণে আসবে ইকনোমিক্যাল সেঙ্কশন কিভাবে তাদেরকে নতজানু করেছিলো। সাদ্দামের ইরাক, খোমেনির ইরান, কিম জং উনের নর্থ কোরিয়া, এরদোগানের তুরস্ক, পুতিনের রাশা, তালেবানদের আফগানিস্তান কাছের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ সমূহ। আমরা আশা করছিনা সৌদি আরবকে তাঁর প্রভুরা এমন কোন  ইকনোমিক্যাল সেঙ্কশন প্রদান করবে কিন্তু আপনি পারেন সৌদি আরবকে আরও মানবিক হতে, মানুষের মর্যাদা প্রাদানে বাধ্য করতে, অন্যায়  ও অযৌক্তিক ভাবে মানুষ হত্যা থেকে বিরত রাখতে।  তাই যদি মুসলিম প্রদান দেশগুলো এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মুসলমানগণ যদি ২০১৯ সাল থেকে ৫ বছরের জন্য হজ্জ-উমরা  সাময়িকভাবে  রহিত করেন তবে আপনার টাকায় আর কোন ইয়েমেনিকে তাঁর প্রাণ হারাতে হবেনা। কোন শিশু পানিয় কেনার সময় কোন ঘাতক বোমায় তাঁর শরীর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হবে না। আমি নিশ্চিত আপনার আল্লাহ আপনার মনের কথা জানেন, আপনার সামর্থ-ইচ্ছা তাঁর অজানা নয় তাই পাচটি বছর যদি এক জালিমকে শিক্ষা দিতে আপনি হজ্জ-উমরা না করেন তাতে আপনি বা আপনার আল্লাহর কিছু কমতি হবেনা। আর যদি কোন ঈশ্বর মানুষকে রক্ষায় ব্যার্থ হবার পরও কোন মানবিক ইনিশিয়েটিভের কারনে অফেন্ডেড হন তবে তাঁর ঈশ্বর ভাবনায় রয়েছে ভয়াবহ আত্মতৃপ্তির উন্মাদনা।
আসুন সবাই একটু মানবিক হই। মানুষের জন্য মানুষ হয়ে ভাবি। যদি মানুষই না থাকে তবে খোদার খোদায়ি দিয়ে কি হবে?   

Saturday 25 August 2018

সৌদি বর্বরতার লাগাম এবং একটি আত্মিক সমাধান।


আমাদের মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, কেন সৌদি আরব ইয়েমেনে বোমা মারে?
ইয়েমেনে হচ্ছেটা কি? সৌদির বোমা বর্ষণের প্রকৃত কারন কি?
হুতি কারা?
সৌদি ও হুতিরা কি মানবতা বিরোধী অপরাধ করছে?
শিশুরা কেন আক্রমণের শিকার হচ্ছে?
মুসলমানগণ কেন নিশ্চুপ?
এটি কি শিয়া-সুন্নি যুদ্ধ?
ইরানের স্বার্থ কি?
এই সকল প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ নয়। এই মানবিক শঙ্কটের কারন খুঁজতে গেলে আমাদের কে একটু পেছনে যেতেই হবে।
 শঙ্কটের শুরু আরব বসন্ত থেকে, এই বসন্তের আগে যে খরা-বর্ষা আর শীতের প্রকোপ এই জাতি সয়েছে তাঁর বিবরণ অন্যদিনের জন্য তুলে রাখলাম।
হঠাৎ করেই আরবের আলিম-জাহিল, মূক-বধির জনগোষ্ঠী জেগে উঠতে শুরু করে। এই বসন্তের হাওয়ার দোলা লাগে ইয়েমেনে।  ৩৩ বছর চেপে থাকা দুনিয়ার সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারের প্রধান শোষক আলি আব্দুল্লাহ সালেহ ক্ষমতার মসনদ থেকে নামতে বাধ্য হয়, ২০১১ সালে ক্ষমতার ছড়ি হাতে পান সালেহর ডেপুটি আবদরাব্বুহ মনসূর হাদি।
মূল্য পড়তে থাকা তেল, পানি শঙ্কট আর বেড়েই চলা কর্মহীন যুব সমাজের ত্রিশূল ধেয়ে আসতে থাকে সানার সরকারের দিকে। অপর দিকে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে সালেহ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে আসা যায়েদি শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের বিদ্রোহ যা হুতি মুভমেন্ট নামে অধিক খ্যাত মরার উপর খরার ঘা হয়ে আসে।  চরম বিশৃঙ্খল সেই জনপদে হুতি শিয়াদের পাশে এসে দাঁড়ায় সাধারণ সুন্নি ইয়েমেনিগণও এবং এরপরই ২০১৫ শুরুর দিকে হুতি বিদ্রোহীগণ রাজধানী সানা দখল নেন। হাদি সানা ছেড়ে পালিয়ে যান, সালেহ ও হুতিদের মাঝে সমঝোতা হয়। এই অস্থিরতা এবং ভূ-রাজনীতির নতুন সমীকরণ দুশ্চিন্তায় ফেলে সৌদি রাজপরিবার আল সৌদকে। এর মাঝে হুতিদের বিরুদ্ধে সৌদি বর্ডার ফোর্স সদস্য হত্যা, সীমান্তবর্তী অঞ্চল দখলের অভিযোগ উঠলে শক্ত হাতে সৌদি তা দমন করে এবং হাদি সরকারকে পুণঃস্থাপনের অজুহাতে দশ মস্তকের রাবণ-রাষ্ট্রগুলো ইয়েমেনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সৌদি আরব এখন লেবাননের বৈরুত, ইরাকের বাগদাদ, সিরিয়ার দামাস্কাস এবং ইয়েমেনের সানার শিয়া ক্ষমতা বা প্রাধান্য দিয়ে বৃত্ত-বন্দি। শিয়াদের পাওয়ার হাউজ হিসেবে বিবেচিত ইরানকে সৌদি ও তাঁর এলাইরা এই হুতি বিদ্রোহীদের মদদদাতা হিসেবে নিশ্চিত করে আসছে। এমন বাস্তবতায় সৌদি আরব মিডল ইষ্টে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ধরে রাখতে ইয়েমেনকে গিনিপিগ হিসেবে নিয়েছে এবং তাদের এই হামলা হামলা ক্রীড়ায় অংশ নিতে গঠিত হয়েছে আরব কোয়ালিশন। এই কোয়ালিশনকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স, তুরস্ক, পাকিস্তান, মরক্কো, জর্ডান, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, আরব আমিরাত, মিশর, সুদান এবং আমাদের বাংলাদেশ।
গত বছরের শেষের দিকে হুতি বিদ্রোহীগণ সৌদি আরবের রিয়াদের দিকে ব্যালিষ্টিক মিসাইল ছুড়লে সৌদি ও তাদের আরব দোসরগণ ইয়েমেনকে ঘিরে ফেলে এবং জল-স্থল ও আকাশে অবরোধ আরোপ করে এবং এর পরই শুরু হয় চরম মানবেতর অবস্থা।  দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। এই অবরোধ ও বিমান হামলাগুলোকে সম্ভাব্য ওয়ার ক্রাইম হিসেবে উল্লেখ করেছে। জাতিসংঘ বলছে হিউম্যানিটেরিয়ান ক্যাটাসট্রফি।  কিন্তু ওআইসি বা মানবতা ও গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা সাহেবেরা এবং মুসলিম দেশ গুলো বেহায়াপনার কালা চশমা পড়ে বসে আছে, তারা এই সৌদি বর্বরতার কোন প্রতিকার করছেনা। অবশ্যই মনে রাখবেন কোন ঈশ্বর বা খোদা তা’লা কোন প্রতিকারে এগিয়ে আসবেন না কারন ধনবান আর ক্ষমতাবানদের কুঠিতে বসবাস করেন তেনারা তাই নিজ জাতের বিনাশে বা নিবৃত্ত করতে কেন আসবেন তিনি? আবশ্যই আমি বলতে পারি তিনি থাকলে তো আসবেন? আমরা জানতে চেয়ে ব্যাকুল সৌদি আরবকে কোন ইকনোমিক্যাল সেঙ্কশনের মুখোমুখি হতে হচ্ছেনা। কেন? ডোনা ট্রাম্প কোথায় আর কে ধরে রেখেছে তাঁর ট্রাম্প কার্ড?
২০১৫ সালে এই যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে অদ্যাবধি সৌদি আরবের কাছে আমেরিকা ও ব্রিটেন ৫বিলিয়ন আমেরিকান ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। এই সকল কিছুই পয়সা ও ক্ষমতার খেলা। কিন্তু এর মূল্য পরিশোধ করছে সাধারণ মানুষ।
ইয়েমেনিরা কি মূল্য পরিশোধ করে যাচ্ছেন?
          এই যুদ্ধ ১০০০ দিন পারি দিতে দিতে ৮মিলিয়ন লোক অনাহারের মুখোমুখি হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
            ২। ১৪ ডিসেম্বর ১৪ পর্যন্ত ৯২৪৫জন প্রাণ হারিয়েছেন বা খুন হয়েছেন। যার মধ্যে ৫৫৫৮ জন ছিলেন নিরস্ত্র সিভিলিয়ান।
            ৩। ৫২৮০০ জন আহত বা পঙ্গু হয়েছেন। যার মধ্যে ৯০৬৫ সিভিলিয়ান।
            ৪। ৫ বছরের নিচে প্রায় ৪০০০০০ শিশু মারাত্মক পুষ্টি-হীনতায় ভুগছে।
            ৫। ১৬.৪ মিলিয়ন লোক প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৭০০০ চিকিৎসা কেন্দ্রের মাঝে মাত্র ৩৫০০ চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নেয়ার ব্যবস্থা কোন রকম করে চলছে।
            ৬। কলেরায় ২২৪৮ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ১ মিলিয়ন মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন।
            ৭। ৩ মিলিয়ন মানুষ নিজ বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। ২ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুহারা রয়েছেন।
            ৮। প্রাণ বাচাতে পলায়ন-রত মাইগ্রেন্টদের নৌকা, পাবলিক যানবাহন, রাত্রিকালীন বাজার, আবাসিক ভবন, সরকারি স্থাপনা হামলার শিকার হচ্ছে।  

জাতিসংঘের নিজস্ব অনুসন্ধান বলছে, সৌদি কোয়ালিশন ২০১৭ সালে ৬৭০ জন শিশুকে হত্যা বা আহত করেছে এবং  ২০১৬ সালে ছিলো ৬৮৩ জনকে হত্যা বা আহত করা হয়। অপর দিকে ২০১৭ সালে স্কুলের উপর হামলার সংখ্যা ছিলো ১৯টি এবং ২০১৬ ছিলো ২৮টি। হাসপাতালের উপর ২০১৭ হামলা হয়েছে ৫টি এবং ২০১৬ সালে তা ছিলো ১০টি।
এই অগাস্ট মাসেই স্কুলের শিশুদের একটি বাসে সৌদি বাহিনী হামলা চালালে ৪৩ জন প্রাণ হারায় যার মধ্যে ২৯জন ছিলো শিশু।  



এখন পর্যন্ত ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ কৃষি ও গ্রামীণ পশুপালনের ওপর আংশিক বা পুরোপুরি নির্ভরশীল। এফএওর তথ্যমতে, ইয়েমেনের মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ ভূমিতে চাষ হয়।

উদ্দেশ্যমূলক-ভাবে ইয়েমেনের ছোট কৃষি খাতেও হামলা চালানো হচ্ছে। এতে করে যুদ্ধ-পরবর্তী ইয়েমেনে শুধু খাবারের অভাবই দেখা দেবে না, সেখানে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পুরোপুরি খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল হতে হবে এবং সেই আমদানির সিংহভাগ যোগানদাতা হবে উপসাগরীয় দেশগুলো, যারা এ মুহূর্তে ইয়েমেনে বোমা বর্ষণ করছে। এতে করে তারা একই মৃত লাশকে দুবার খুন করে লাভবান হবার সুযোগ পাবে।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের ইমেরিটাস অধ্যাপক মার্থা মুন্ডি ইয়েমেনের কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান জোগাড় করেছেন। এগুলো বিশ্লেষণ করে তিনি দেখেছেন, ‘সৌদি আরব ইয়েমেনের কৃষি অবকাঠামোতে হামলা চালিয়ে যে বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দিচ্ছে, তা এখন স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।তিনি দেখিয়েছেন, ইয়েমেনের কৃষি ও সেচ মন্ত্রণালয়ের একটি সতর্ক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির ২০টি প্রদেশের ৩৫৭টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে, যার মধ্যে আছে কৃষি-খামার, প্রাণী, পানি অবকাঠামো, খাদ্যের গুদাম, কৃষি ব্যাংক, বাজার ও খাদ্যের ট্রাক।
এর মধ্যে ইয়াসনিম, সাদাহ্ প্রদেশের বাকিম জেলা ও মারানের কৃষি খামারও আছে। মুন্ডি এই হামলাগুলোর সঙ্গে ইয়েমেনের ডেটা প্রজেক্টের পরিসংখ্যানের তুলনা করেছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত খামার, কারখানা ও মৃত প্রাণীর প্রচুর ছবি পাওয়া যাচ্ছে, কৃষকেরা বহুদিন ধরেই কাজে ফিরতে পারছেন না। মুরগি ও মৌমাছি পালন-শিল্প একেবারেই ধ্বংস হয়ে গেছে।
 জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্টভাবে বলা আছে: সুনির্দিষ্টভাবে বেসামরিক মানুষের জীবনযাপন অসম্ভব করে তোলা বা অন্য যেকোনো উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, বেসামরিক মানুষের জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য উপাদান যেমনখাদ্যবস্তু, কৃষিজমি (যেখানে চাষাবাদ ও প্রাণী চরানো হয়) ধ্বংস, আক্রমণ, সরানো বা তাকে অকার্যকর করা নিষিদ্ধ।
ইতিমধ্যে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। কাহাতক আমরা দেখতে থাকবো?
সৌদি আরব ইয়েমেনে এই হামলা চালানো বাবদ প্রতি মাসে ২৫ কোটি ডলার ব্যয় করছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এ হিসাব দিয়েছে। অথচ সৌদি আরব নির্মাণ কোম্পানিগুলোর দেনা পরিশোধ করতে পারছে না।


জালিম, জুলুম ও ভদ্র পাড়ার ঈশ্বর

আজ সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেলো একটা স্বপ্ন দেখতে দেখতে... কি দেখেছিলাম স্বপ্নে?
আমি ও আমার এক পরিচিতজন কোন এক বিশাল ক্যাম্পাসে আরো শত শত মানুষের সাথে বসে আছি, কারো মাঝে উতকন্ঠা আছে, আছে উদাসীনতা অথবা শুধুই সময় কাটানো আমেজ। হঠাত করে একদল লোক মাঠের এক কোনা থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে আসছে। সাথে সাথেই যা হবার তাই, মানুষ দিক-বিদিগ ছুটোছুটি শুরু করেছে। মানুষের চিৎকার! আর আমারও ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো...মোবাইলটা হাতে নিলাম। নিউজ পড়তে শুরু করতেই সিরিয়ায় কুকুর-মেকুর আর পেঁচার সম্মিলিত আক্রমণের খবর পড়েই মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
বিশ্বের বড় বড় অস্ত্রের মজুতদার, ব্যাবসায়ি্গণ ক্যামিকেল ওয়েপন রাখার এবং ব্যাবহারের বাহানায় হামলে পরেছে একটি দেশে যে দেশে আলরেডি তার দেশের জারজগণ যুদ্ধ লিপ্ত...যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় অলরেডি লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন।
একদল আসাদকে সড়াতে চায়, একদল গণতন্ত্র ফেরী করতে চায়, একদল নিজ সীমান্তে একজন দাসানুদাস দেখতে চায়, একদল নিজেদের মোড়লদারী পূণপ্রতিষ্ঠা করতে চায়, একদল জাতীয় উন্নয়নে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে অস্ত্রের কারবার বাড়াতে চায় আর একদল ভাবে ইমাম মাহাদী এসে সব ঠিক করে দিয়ে যাবে।
এই যে এতো দলের মহাকাব্য তার শুধু দুটি চেহারা, জালিম ও মজলুম। আমরা এই বিষয়টি বুঝতে দেরী করছি। আমরা আফগানিস্তান দেখেছি, আমরা ইরাক, লিবিয়া, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, আফ্রিকান দেশগুলোকে দেখেছি। আগেই বলা বাহানায় এরাও যুদ্ধ যুদ্ধ খেলেছেন। নিজের সাজানো বা চলনসই দেশে দেখেছেন অন্তত যুদ্ধ-উত্তর দেশের চেয়ে যুদ্ধ-পূর্ববর্তি দেশকে এমন তর দেখেছেন। সেই দেশগুলোতে জাতীয় ইনফ্রাষ্ট্রাকচারের বিনাশ, শিক্ষা ব্যাবস্থার অধঃপতন, চিকিৎসা ব্যাবস্থার বেহাল দশা , বিচার ব্যাবস্থার ব্যার্থতা, দূর্নিতি চরম বিকাশ ছিলো যুদ্ধের উপহার বা গনিমত। প্রশ্ন হলো সেই দেশের সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের কাছে জানতে চাইলে তারা কি যুদ্ধের পক্ষে থাকবেন? কখনোইনা না। এই যুদ্ধ তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া অন্যায্য অন্যায় যুদ্ধ ব্যাবসা। এতো এতো ধ্বংসের চেয়ে একজন হিটলার-মুসোলিনি কিংবা বুশের-ব্লেয়ারের ভূতের সিষ্টেমেটিক অত্যাচারও মানুষ মেনে নেবে তবুও গণতন্ত্র আর আরব বসন্তের পিরিয়ডের রক্তে স্নান করতে চাইবেনা।
বাংলা ভাষায় যে মগের মুল্লুকের কথা আমরা শুনেছি, কিংবা তুঘলকি কারবারের কথা আমরা শুনেছি এসব কিছুই আজ এদের কাছে নস্যি মাত্র। একটি স্বাধীন-স্বার্বভৌম রাষ্ট্র অপর একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের উপর হামলা চালায়, রাতে নয়, দিনে-দুপুরে। সমস্ত বিশ্ব আজ ভুলে গেছে জিজ্ঞেস করতে এই যেকোন অজুহাতে অন্যকে আক্রমনের হালালা তারা কোথা থেকে পেয়েছেন? কিসের অধিকারে, কিসের দায়ে তারা এমন বর্বরতার দিকে এগিয়ে চলেছেন? আমি শুধু একটি উত্তরই দেখি, ক্ষমতা, অর্থ আর ব্যাবসার নেশায় তারা এমনটা করে।
মাত্র একদিন আগে ফ্রান্সের মেকুর রাশার খেকশিয়ালকে ফোন দিয়েছে, বেয়াই-বেয়াইন টাইপ কথা বলেছে, আমেরিকার কুকুর কিংবা ব্রিটিশ পেঁচা নীরবে ছক কাটায় ব্যাস্ত ছিলো তারপর আজ সকালে তারা ঝাপিয়ে পড়লো তথাকথিত টার্গেটেড হামলা বাস্তবায়নে। তারা মাদের বলতে চায়, আমরা সিভিলিয়ানদের হামলা করিনা (ভুলে যাবেন না, স্কুলে, হসপিটালে তাদের হামলার কথা!), কেন ভুলে যাও হে হারামজাদারা সেই দেশের টয়লেট থেকে রাজ প্রাসাদ সব কিছুই সেই দেশের মানুষের, তাই তুমি তোমার পশু মুখ যেখানেই দেখাও না কেনো তা সেই দেশের সর্বনাশের জন্য যথেষ্ঠ।
যারা একটু আধটু খবরাখবর পড়েন তারা জানেন যে যুদ্ধে বিদ্ধস্ত্ব একটি দেশ সিরিয়া। আসাদ তো দূরে থাক ট্রাম্পের মতো খবিসও যদি সিরিয়ার শাষক থাকত তবে এহেন অবস্থায় নিজ দেশে কোন ক্যামিকেল এটাক করার সাহস বা সুযোগ কোনটাই নিতোনা।
মাত্র কয়েকদিন আগে ট্রাম্প ভাড়টা বলেছে তার দেশের জারজদের সিরিয়া থেকে তুলে নেবে আর তারপরই ক্যামিকেল এটাক! মনে আছে গত বছরের ক্লোরিন এটাকের কথা, মনে আছে সেই ড্রামা!?
প্রত্যেক একনায়ক, স্বৈরাচার শাষণ করতে চায়, জুলুম করতে চায়, সে তার ক্ষমতা থেকে উতখাত হতে চায়না সেখানে কোন যুক্তিই আসাদকে এমন তর বুর্বকের কাজ করার উতসাহ যোগায় না। এছাড়া রাশিয়ার জন্য সিরিয়া একটি সাকসেসের বিশাল মডেল, তারাও চায় না এই সফলতা ভেস্তে যাক।  তবে পেছনের ড্রামাটি কি? আপনাকে বক্সের বাইরে ভাবতে হবে।
অন্যায় অন্যায্য সব খানে। আমরা সবাই বোবা প্রাণীদের চেয়েও অসহায় হয়ে আছি। কিসের স্বাধীনতা? কিসের মানবতা? শক্তিমানই সঠিক এবং একমাত্র সত্য... বাকি মানুষ সব ঘুমিয়ে আছে, চোখ বন্ধ করে আছে, কানে তুলো দিয়ে আছে... তবে কিছু মানুষ চরম বিপ্লব করছে... যেমন কুকুর-মেকুর,প্যাচার কুশ পুত্তলিকা দাহ করা, মিছিল করে ক্লান্ত হয়ে আখের রস সেবন করা, জুমআর নামাজে “আল্লাহ তোমার কাছে বিচার দিলাম” বলে চেচানোর মতো কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আর এটা ঈমানের সর্বোচ্চ প্রকাশ...
আপনাদের কাছে একটাই প্রশ্ন রাখি, আপনি কি গত দুই হাজার বছরের ইতিহাসে এমন কোন জালিমের বিচার শুনেছেন বা পড়েছেন  যারা এখনের জালিমদের চেয়ে কম বা বেশী ছিলো?
আমি খুজে পাইনি। আমি দেখেছে শক্তিমানেরা আরো শক্তিশালী হতে, ধনী আরো ধনী হতে, জালিম আরো বড় জালিম হতে... কোথায় গেলো এতো মজলুমেরে কান্নার জল, কোথায় গেলো এতো এতো প্রার্থণা?
আমি জেনেছি কোন ঈশ্বর জালিমের মহল্লায় থাকেনা, আসেনা... দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ঘুষখোর এই ঈশ্বর মহোদয়। গত দুই হাজার বছরেও তেনার কোন মজলুমের দরজায় এসে দাড়াতে দেখিনি। ইয়েমেন থেকে ফিলিস্তিন,     

   

Saturday 11 August 2018

ঈমাম ও সম্মান।


শুনেছেন খবর একখান, জবর খবর। এরশাদ মামু এইবার ইমাম অয়েচেন। ইসলামি মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাচের ওয়াহেদ পারুক সাব বুলেচেন, ইমামতির জইন্য কিচু যোগ্যতার প্রয়োজন, সেটা এরশাদ মামুর আচে। জব্বর আচে। তিনি আরও বলিলেন, আমরা তাঁকে ইমামতি দিয়েচি কারন কোনো মহিলাকে ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া যায় না !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
কেনেরে মুমিন? কেনে যায়না?
তোমার চৌদ্দগুষ্ঠির কসম লাগে পোলায় কি বিয়াইতে পারে এমন যুক্তি আর দিয়োনা...
৩৪টি বলদের দল লিয়া করলা জোট, নাম দিচ ইসলামি মহাজোট !!! কোন মহিলা পেটে ধরছে তোমার মতো নিমক হারামকে, লালন পালন করতে পারছে, তোমাদের সবগুলারে কানে ধইরা বড় করতে পারছে, দাড়ি-মোছ গজাইয়া আইজ বলো সেই মহিলাগণ তোমার নেতা হইতে পারবোনা...
বাংলাদেশের কোন মহিলা এরশাদ কাগুর মতো লুইচ্চা, বদমাশের ইমাম হইতে চাইবে না তাই তোমাদের ইমামতি তোমরা নিজের বগলে রাখো। এরশাদ কাগু হাম্বালীগের প্রধান এবং জবর দখল করা প্রাই মিনিষ্টারের বিশেষ দূত, ভুলিয়া যাইয়োনা।
এরশাদ কাগু বলেচেন, ইসলামের চেয়ে বড় শক্তি আর নেই কিন্তু অনৈক্যের কারণে ইসলাম আজ ধ্বংসের মুখে ইসলামকে দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামের আওয়াজকে বুলন্দ করতে হবে
 এই যে ইসলামই বড় শক্তি, এই চিন্তাই মুসলিমদের পতনের সব চেয়ে বড় কারন। কাগুর সাথে কাঠ মোল্লাদের ঐতিহাসিক ৬ দফা চুক্তি হয়েছে, সেই ছয় দফার চুক্তির উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পবিত্র কোরআন-সুন্নাহবিরোধী আইন না করা, সংবিধানে আল্লাহর প্রতি আস্থা বিশ্বাস কথাটি পুনঃস্থাপন করা, কওমি শিক্ষার সনদের স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় সংসদে আইন পাস করা, সব ধর্মের লোকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা
যদি সত্য সত্যই চাও সব ধর্মের লোকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত হউক তবে কেন বলোনা, কোরান-হাদীস,গীতা-রামায়ন,বাইবেল সহ আরও যতো ধর্মীয় গ্রন্থ আছে সবগুলোর বিরোধী কোন আইন করা যাবেনা। কেন তুমি চাওনা তোমার আল্লাহর সাথে সাথে ভগবান আর জিসাসের অথবা আদিবাসী-পাহাড়ী ঈশ্বরের কথাও সংবিধানে লিখা হোক। তারপর এই বাংলাদেশ পুরাই ধর্মময় একটি রাষ্ট্রে রুপান্তরিত হবে। এটলিষ্ট কোন সংখ্যালঘু ব্যাক্তি তার জোয়ান মেয়ে ভয়ে থাকবেনা যে যেকোন অযুহাতে অযু করে কোন মুসলমান বা হরে রাম বলে কোন শক্তিমান তার জান-মাল-সম্মানকে হালালা করে ফেলবে।
এরশাদ কাগু কতোবড় মুসলমান তা বুঝাতে তিনি বলেছেন,
ইসলামের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন তিনি তাঁর দল জাতীয় পার্টি তিনি বলেন, ‘ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছি শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটি করেছি সব মসজিদের পানি বিদ্যুতের বিল মাফ করে দিয়েছি সবই করেছেন কিন্তু মানুষকে বোকা বানানোর জন্য করেছেন তা বলেননি। আপনার নিরাপত্তায় থাকা স্পেশাল এডভান্স টীম এক সাপ্তাহ আগে থেকেই গ্রাউন্ড করতে শুরু করলেও কোন একদিন জুম্মার নামাজে এসে বলেছেন, গত রাতে (স্বপ্ন দোষে) সেই মসজিদে নামাজ পড়তে দেখেছেন তাই আপনি এই মসজিদে শরিক হতে এসেছেন। বিনা প্রয়োজনে, জনগণের দাবী না থাকা সত্ত্বেও নিজেকে পপুলার করার জন্য বাংলাদেশের কপালে ইসলাম একে দিয়েছেন। যেমনটা জিয়া সাব করেছিলেন। ওহ ভুলেই গিয়েছিলাম আপনাদের ট্রেনিং তো পাকিস্তানে হয়েছে!!!
এই সভায় চার চান লাগাতে উপস্থিত ছিলেন আরেক মহারতি, জনাবে বুলবুলি, খেলাফত মজলিসের আমির সিলেটের কাজীরবাজার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান। তিনি  বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশে ইসলামি শাসন কায়েম করব বিজয়ের নিশানা উড়িয়ে দেব উড়িয়ে দেন, কিন্তু ভোটের মাধ্যমে দেন। জঙ্গিবাদের মাধ্যমে নয়। জঙ্গিদের, মুজাহিদদের থেকে উৎসাহিত হয়ে নয়। মাদ্রাসার ছোট ছোট ছেলেদের নিজ রাজনীতিক লালসায় ব্যাবহার করে নয়। তাদের দারিদ্রতাকে পূজি করে তাদের নামে সংগৃহিত টাকায় নিজ বাড়ি করে নয়।

এরশাদের নেতৃত্বে বর্তমানে ৫৮ দলের সম্মিলিত জাতীয় জোট আছে খেলাফত মজলিস এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সম্মিলিত জাতীয় জোটে জাতীয় পার্টিসহ মোট দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৬০ এই দলগুলোর বেশীর ভাগ ফলোয়ার বা সমর্থকগণ দরীদ্র মাদ্রাসা পড়ুয়া সমাজ। বাংলাদেশ এমন এক দেশ যে তার নিজের জনগণের একটি অংশকে যুগের পর যুগ তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক বা তারও নিচে করে রেখেছে। এরা আর কেউ নয়, বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র সমাজ। এরা সাম্রিক-আধাসামরিক, বেসামরিক বা সরকারি দপ্তরের কেরানি তো বহু দূর , পিয়ন হবার অনুমতি নেই। এদের ঠিকানা মসজিদ, মাদ্রাসা, ফসলের মাঠ, বেশী থেকে বেশী দোকান। অহ ভুলেই গেছি ডেষ্টিনি বা আপনাদের লিল্লাহ, সদকা, ফিদিয়া গ্রহিতা হিসেবে তো আছেনই। স্বাধীনতার ৪ দশক হলেও আজও এদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। কিন্তু এদের উপর ভর করে, এদের রক্তে নিজেদের রাস্তা রঙ্গিন করে ক্ষমতার পালা বদল চলে আসছে যুগের পর যুগ। হায়রে বাংলাদেশ তুমি তোমার সন্তানের মাঝেও করে রেখেছ ভেদ। ধিক এই নেতা, দেশ আর সংবিধান যা দিতে পারেনা মানুষের সম্মান।
  

কৃতজ্ঞতা @ দৈনিক প্রথম আলো। 

Sunday 29 July 2018

নির্বাচনঃ ধর্মের ব্যাবহার, পুরুষতান্ত্রিক মনোজগৎ এবং অথর্ব নিথর অলস জনতা ও জবাবদিহিতা...




আগামীকাল ভোর হলেই আমাদের অনেকের প্রাণের শহর সিলেটে সিটি কর্পোরেশন ইলেকশন ২০১৮ অনুষ্ঠিত হবে। এবারই প্রথম দলীয় ব্যানারে বা প্রতীকে সিটি কর্পোরেশন ইলেকশন হবে। এবারের নির্বাচনের পূর্বে ২০ মার্চ ২০০৩ সালে প্রথম সিটি কর্পোরেশন ইলেশন হয় এরপর ৪ আগস্ট ২০০৮ এবং ১৫ জুন ২০১৩ সালে ৩য় সিটি কর্পোরেশন ইলেকশন অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের অনেকেরই মনে থাকার কথা ২০০৩ সালে বিএনপি সমর্থিত এম এ হক সাহেবকে আওয়ামিলীগ সমর্থিত বদর উদ্দীন আহমদ কামরান সাহেব প্রায় ২২ হাজার ভোটে পরাজিত করেছিলেন। এরপর কারাগারে থেকেও ২০০৮ সালে আবারো বিএনপি সমর্থিত আ ফ ম কামাল সাহেবকে  প্রায় ৮৩ হাজার ভোটে পরাজিত করেন তিনি। ২০১৩ সালে   আওয়ামিলীগ সমর্থিত বদর উদ্দীন আহমদ কামরান সাহেব প্রায় ৩৫ হাজার ভোটে বিএনপি সমর্থিত আরিফুল হক চৌধূরী সাহেবের কাছে পরাজিত হন। এই ভোট ভোট খেলা আবারও আমাদের সামনে এসেছে কিন্তু এতোদিনে সুরমার জল গড়িয়েছে অনেক দূর, বদলে গেছে মানুষ, বদলে গেছে সময় আর বহুরুপি পলিটিশিয়ানগণও...
ইলেকশন এলেই আমাদের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াগুলোতে রিপোর্ট করা হয় সিলেটের পূণ্যভূমি থেকে, শাহজালালের মাজার থেকে আওয়ামীলীগ বা বিএনপি তাদের নির্বাচণী প্রচারণা শুরু করেছে। অথবা আমরা দেখতে পাই প্রার্থীদের মসজিদে মসজিদে আনাগোনা, এতিম খানায় দান-খয়রাত, ইমাম, আলেমদের সাথে উঠা বসা, মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ইত্যাদি।
কোন প্রার্থী তাঁর প্রচারণা কৌশল হিসেবে এদের সাথে যোগাযোগ করলে তাতে আমাদের বলার কিছু নেই বলেই যদি আমরা চোখ বন্ধ করি তবে সেখান থেকেই সমস্যার উৎপত্তি হতে শুরু করে।।কয়েকটি উদাহরণ দিলেই অনুধাবন করা যাবে...
যেমন বন্ধবন্ধু। তিনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। একজন পেশাদার কমিটেড রাজনীতিবিদ ছিলেন তিনি। মানুষকে একিভূত করেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়তে প্রেরণা হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি একজন পিতা, স্বামি,ভাই, বন্ধুও ছিলেন। উনার রাগ-দুঃখ, হিংসা, আশা-লোভ সব ছিলো যেমনটা থাকে সকল রক্তমাংসের মানুষের। উনার মৃত্যুর পর অতি উৎসাহী চাটুকার ও বেকুব আওয়ামিলীগার (উনার মেয়ে সহ) উনাকে দেবতা বানানো শুরু করলো। উনাকে সমালোচনা করা যাবেনা, উনার কাজ নিয়ে, সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা যাবেনা, সমালোচনা করা যাবেনা। যেমনটা করা যায়না আল্লাহ, খোদা, ভগবান কিংবা কোন নবী-রাসূল নিয়ে।
লাখো লাখো মানুষের বলিদানে অর্জিত স্বাধীনতাকে সম্মান জানাতে গিয়ে শিখা অনির্বাণ কে সশস্ত্র সৈনিক দিয়ে পাহাড়া দিয়ে  অথবা অমুক বেদীতে বা তমুক শহীদ মিনারে জুতা পা দিয়ে উঠা যাবেনা এমন সম্মানের কোড সৃষ্টি করে এগুলোকে আরেক মসজিদ, মন্দির করে ফেলা হয়েছে।
ঠিক একই ভাবে একটি শিক্ষিত রেশনাল জাতী নির্মাণের দিকে এগিয়ে না যেয়ে জনতাকে ইমোশনালী ধোকা দিতে বিজয়ের জন্য, মঙ্গলের জন্য দরগা-মাজার থেকে প্রচার চালানো ধর্মের নামে অধর্ম করা ছাড়া আর কিছুইনা। জামায়াত এক সময় তাদের প্রতীক কে “ইনসাফ” প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন হিসেবে দেখানোর কারণে মানুষ ইনসাফ, দাড়িপাল্লা এগুলোর এক ধরণের ইমোশনাল ধোকায় পতিত হতেন। শেখ হাসিনা তাঁর জীবনে বহুবার হজ্ব করেছেন, কিন্তু ৯৬’র মাথায় পট্রি, হাতে তসবি দিয়ে মানুষকে তাঁর বাবার শাষণ আমলকে যেভাবে এন্টাই ইসলামিক ইমেজ তৈরি করা হয়েছিলো তাঁর জবাবে তিনি সেই পট্রি-তসবি ব্যাবহার করেছেন।
সিলেটের সিটি কর্পোরেশন ইলেকশনে সাধারণ মানুষকে তাদের ধর্মীয় আবেগকে নাড়া দিতে বদর উদ্দীন কামরান সাহেব  উন্নয়ণ , দূর্ণীতি ও ট্রান্সপারেন্সি বিষয়ে তাঁর প্রধান প্রতিদন্ধি আরিফুল সাহেবকে সমালোচনার সাথে সাথে এও জনগণকে বলেছেন, শাহজালালের মাঝারে উরুস উপলক্ষ্যে আরিফুল হক সাহেব তোরণ নির্মাণ করাননি! মাঝার কেন্দ্রিক কুসংস্কার নিয়ে কাজ না করে তাঁর দিকে মানুষকে আরও গভীর জালে জড়াতে এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজই উনার শেষ অর্জন নয়। সৌদি আরব থেকে জনৈক ব্যাবসায়ি ফয়সাল গিরগিরি কে নিজ নির্বাচনের প্রচারে এনেছেন। এই লোক তাঁর ট্রাডিশনাল পোষাক আবায়া বা তোব বা সেকাব্বন পড়ে মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন, আরবীতে ভাষণবাজি করেছেন। অতি সাধারণ মানুষ যারা আরবী ভাষা বোঝেন না, যারা শাসক শ্রেণীর এসব ট্রিককে নজর আন্দাজ করে ফেলেন সহজে। তাদের কাছে আরবী মানেই কোরআন বা তাঁর কাছাকাছি মর্যাদার কিছু, সৌদি আরব মানেই পূণ্য আর পূণ্য। অত্যন্ত অবাক করার বিষয় এই যে কামরান সাহেব আমাদের জানাচ্ছেন এই লোকের সাথে উনার হজ্বের সময় পরিচয় হয়েছে এবং সেই সময় সে উনাকে কথা দিয়েছেন উনার জন্য উনার ইলেকশনে সে কাজ করবে! হজ্ব করতে যেয়ে তাঁর সাথে আপনি ইলেকশন ক্যাম্পেইন নিয়ে কথা বলেছেন! ২০০১ সালের ইলেকশনে জামায়াত যখন বিএনপির সাথে জাতীয় ইলেকশনে জোট গড়লো তখন ভাঙ্গা মসজিদের ছবি, মাদ্রাসা ছাত্রদের মিছিল ও তাদের আহত-রক্তাক্ত ছবি, আওয়ামিলীগকে ভোট দেয়ার কারনে কিভাবে গুনাহর ভাগিদার হতে হবে, এমনকি সম্পূর্ণ নির্বাচনকে ইসলাম রক্ষার নামে প্রচারণা চালাতে আমরা দেখেছি।
ধর্মকে ব্যাবহার এবং অপব্যাবহার মানুষের রেশনাল চিন্তাকে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। সিলেটের মানুষের জন্য মাজার-দরগা একটি ইনহেরিটেড অভিশাপ। ভুলে গেলে চলবেনা ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত ধর্ম বিশ্বাস যখন প্রচারে বা সমাজে প্রভাব বিস্তারে কাজে লাগানো হয় তাঁর পেছনে মানুষকে ধোকা দেয়া ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য থাকেনা।         
জনাব কামরান সাহেব এই পর্যন্ত তাঁর যে ইমেজ সৃষ্টি করেছেন তাতে তিনি সদা একটি সাদা টুপি পরিহিত, সফেদ পাঞ্জাবি বা অতি সাধারণ ডিজাইন বা কারুকাজ বিহীন পাঞ্জাবি পরিহিত সদা হাস্যজল একজন মানুষ। তিনি নগরে অস্বীকৃত, পিছিয়ে পরা , তথকাথিত নীচু শ্রেণীর মানুষ থেকে শুরু করে প্রায় সব খানেই বিয়ে কি কুলখানি সবখানেই হাজির হতেন তোহফা নিয়েসাধারণ জনগণের সাথে হাত মেলাতেন, আলিঙ্গন করতেন। কিন্তু এমন দেবতার মতো মানুষকে কেন জনতা ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দিলো? উনার সম্পর্কে অভিযোগগুলো কি?
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে যুগান্তর পত্রিকায় তোহুর আহমদ ও রেজোয়ান আহমেদ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন,সেখানে ১৫ ডিসেম্বর ২০১২ থেকে ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ সালে এই সময়কালে তৎকালীন মেয়র বদর উদ্দীন কামরান সাহেবর দায়িত্বপালনকালে অডিট অধিদফতরের দেওয়ান আব্দুর রশিদ, নজরুল ইসলাম ও শংকর চন্দ্র কর এই  তিন অডিট কর্তা মোট ৪৪টি বিষয়ে ৮০ কোটি টাকার অডিট আপত্তি প্রদান করেন। তারা কোটি কোটি টাকার লেনদেনের কোন বিল-ভাউচার খুজে পাননি। এই বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, “বিল-ভাউচার জমা হলো কি না তা দেখার দায়িত্ব মেয়রের নয়”
তাঁর দায়িত্ব পালনকালে সিটি কর্পোরেশনের নামে ১৩৪টি ব্যাঙ্ক হিসেব খোলা হবার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কেন এতো একাউন্ট!? জবাবে তিনি বলেছেন, নতুন নতুন ব্যাঙ্ক তাদের ব্রাঞ্চ খোলার পর তাদের অনুরোধ রক্ষায় একাউন্ট খোলা হয়েছিলো। আমাদের প্রশ্ন বাংলাদেশে কতোটি ব্যাঙ্ক রয়ছে? আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী বাংলাদেশে পাবলিক , প্রাইভেট, ইসলামিক, ফরেন, নন-সিডিয়ুল ব্যাঙ্ক সর্বসাকুল্যে ৬৩।  মনে রাখা প্রয়োজন এই ব্যাঙ্কগুলোর অনেকগুলোই তাঁর মেয়াদকালের পর ব্যাবসা শুরু করেছে।
নির্বাচনে কোন প্রার্থী যে ইশতেহার ঘোষণা করেন তাঁর প্রেক্ষিতে যে সকল নাগরিক সেই প্রার্থীকে ভোট দেন তা সেই সব জনগণের আকাঙ্ক্ষা বা রায় তাই সরকারের সকল স্তরের জন্য বিজয়ী প্রার্থীর ইশতেহার সম্মান কর অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু যখন আরিফুল হক সাহেব বদর উদ্দীন কামরান সাহেবের দূর্ণিতীর শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন বলে জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্থানীয় সরকার সচিব সেই তদন্ত করার অনুমতি না দিয়ে দলীয় লেজুড় বৃত্তি এবং বৃহৎ স্কেলে সিষ্টেমেটিক দূর্ণিতীর দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। সরকারের সহযোগীতার অভাবে যখন আরিফুল হক সাহেব একটি বেসরকারি অডিট ফার্ম দিয়ে দূর্ণীতি অনুসন্ধান করাতে চেয়েছেন তখন  আওয়ামীলীগ সরকার তাতেও বাধা দেন। প্রশ্ন হলো কিসের ভয়ে এমন দূরাচার সরকার করেছিলো? 
সিলেট শহরের রাজনীতিতে জামায়াতের নেতাদের সাথে তাঁর সখ্যতা অন্যতম আলোচনার বিষয় খোদ ইনার নিজের দলের নেতা-কর্মিদের মাঝেও।
অপর দিকে আরিফুল হক সাহেব যার নাম আর দূর্নীতি এঁকে অপরের সমাথার্ক ভাবা হয় সেই আরিফুল হক সাহেব বিএনপি সরকারের আমলে প্রয়াত সাইফুর রহমান সাহেবেরে নেক নজরের বদৌলতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে অকেজো করে রেখে বদর উদ্দীন কামরান সাহেবের প্যারালালে আরও একটি মেকানিজম চালু করেছিলেন। সিলেট শহরের একটি গাছ থেকে আকাশ ছোঁয়া দালান পর্যন্ত তাঁর দখল, তাঁর নজর এবং লাভের লেলিহান নজর থেকে রেহাই পায়নি। দূর্ণীতি দমন কমিশনের ঘোষিত ৫০ জন দেশ সেরা দূর্ণীতিবাজদের তালিকায় তিনি ছিলেন প্রথম সারির একজন। তাঁর দূর্ণীতির এই যাত্রায় তাঁর স্ত্রীও ছিলেন তাঁর একান্ত সঙ্গী যার নামেও দূর্ণীতির মামলা হয়।
ভূমিখেকো আরিফুল হক সাহেব তাঁর উগ্র মেজাজের জন্য তাঁর দল এবং দলের বাইরেও সমান ভাবে আলোচিত ও সমালোচিত। আরিফুল হক সাহেবের সময়ে সিটি কর্পোরেশন অফিসে শ্বাস নিতেও ঘুষ দেয়ার অভিযোগ ছিলো নিত্যদিনের কাজ। উল্লেখ্য যে  আরিফুল সাহেব সাবেক অর্থমন্ত্রী এ এস এম কিবরিয়া সাহেবর হত্যা মামলার একজন চার্জশীটভুক্ত আসামি ছিলেন।  এই যদি হয় সাবেক দুই নগর প্রদানের কর্মকান্ড তবে কিভাবে আমরা মেনে নিয়েছিলাম আমাদের নগরপিতা হিসেবে?! উনারা কি আসলেই এই সম্মান ডিজার্ভ করেন?
আমরা নতুন সিটি মেয়র এবং কাউন্সিলর নির্বাচীত করতে যাচ্ছি ডাইরেক্ট ভোটের মাধ্যমে। গণপ্রতিনিধিত্বমূলক ডেমোক্রেসিতে নারী-পুরুষ,জাত-পাত,ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণী-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাই আইনত অংশ নিতে পারেন। এমন ব্যাবস্থাপনায় আপনি দেখতে পাবেন আমরা নিজেদেরকে উট পাখির মতো করে বালিতে মুখ গুজে রেখে শুনেই চলেছি এই আয়োজন একজন নগরপিতা নির্বাচনের আয়োজন। (উটপাখি নিয়ে প্রচলিত ধারণাটি সঠিক নয়)    
কেন আমরা প্রশ্ন করিনা, কেন নগর মাতা নয়? কিংবা কেন একজন তৃতীয় লিঙ্গ বা অনির্ধারীত লিঙ্গকে আমরা স্বয়ংক্রিয় ভাবে এক্সক্লুড করে রেখেই আমরা আমাদের মনোজগৎ প্রতিষ্ঠিত করছি? যারা আমাদের ভোট নিয়ে আমাদের ম্যান্ডেট নিয়ে তথাকথিত নগরপিতার আসনে বসেন তারা কতোটা পিতার ভূমিকা পালন করেন? তাদের সাথে আমাদের বাস্তব এবং প্রকৃত সম্পর্কটি কি বা কেমন থাকার কথা ছিলো?
শহর ব্যাবস্থাপনায় একজন নগর কর্মি, একজন নগর হিসাব রক্ষক, নগর সুইপার, নগর ট্যাক্স পরিদর্শক পদগুলো নাগরিকদের ট্যাক্সে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের একজন সেবা প্রদায়ক মাত্র। সরল অর্থে মেয়র-কাউন্সিলরগণ শুধুমাত্র একজন সেবক এবং প্রতিনিধি। আমাদের অতীতের কোন মেয়রগণ দরিদ্র কোন রিক্সা ড্রাইভার, সুইপার কিংবা দিনমজুরকে আলিঙ্গন করলে বা হাত মেলালে অথবা সমাজে পিছিয়ে পরা কোন নাগরিকের সন্তানের বিয়েতে অথবা মানুষের কোন আবেগময় কোন আয়োজনে সহজেই উপস্থিত হলেই তিনি পিতার ভূমিকা পালন করা হয়ে যায়না। এসব করাই তাঁর প্রধান কাজ নয়। একজন পিতা বা মাতা বা তাদের মর্যাদার কেউ নিজ লোকের সম্পদ চুরি বা ডাকাতি করেন না, কোন দল বা গোষ্ঠির তাবেদারী-গোলামি করেন না, নিজ স্বার্থ রক্ষায় অবিবেচক হয়ে উঠেন না তাই নগরপিতা শব্দ শুধু লিঙ্গ বৈষম্য করেনা, এই শব্দ অতীতের মেয়রদের কাজের সাথে সামনজস্যপুর্ণও নয়। নগর রক্ষক বা সেবায়েত কে যখন পিতার আসনে বসাবেন তখন মনে রাখবেন তারা জবাবদিহিতার দায়িত্ব থেকে ভেগে যেতে উৎসাহী হবে। আপনার ভোট নিয়ে নিজের পজিশন কে সেল করার ব্যাবসায় লাভবান হবে। তাই নগরপিতার আসন থেকে সড়িয়ে নগরের একজন সেবক যাকে আপনি নির্বাচীত করেছেন আপনার কথা শুনার জন্য, এই শহরের কল্যাণের জন্য তাকে শুধুই নগরের সবার একজন কর্মচারি ভাবুন। একজন নাগরিক হিসেবে আপনার দায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথমধাপ সেখানেই।    
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত, বিদগ্ধ আইনজীবী রাম জেটমালানি তাঁর এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন,
“Democracy without education is hypocrisy without limitation” 
এবারের ইলেকশনে আমরা ৭জন প্রার্থী সম্পর্কে জানতে পেরেছি যাদের ৩ জন স্বশিক্ষিত। আমাদের ভাবতে হবে এদের মাঝে আরিফুল হক সাহেব নিজেও স্বশিক্ষিত। উনি উনার ইশতেহারে ড্রিমটিম, ফ্রি ওয়াইফাই জোন, গ্রেভ ইয়ার্ড ইত্যাদি ইত্যাদি টার্ম তো ইউজ করছেন কিন্তু আমাদের কে বুঝতে হবে এগুলো তারা গিমিক হিসেবেই বলছেন কি না? তাঁর বিরুদ্ধে ৭টি ফৌজদারী মামলা চলমান রয়েছে। কামরান সাহেব নিজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ৪টি মামলা ছিলো যেগুলো তাঁর নিজ দলের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মামলা থেকে অব্যহতি পেয়েছেন। জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী এল এল বি পাস করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ৩৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। বাকি ৪জনের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই এবং তাদের একজন স্বশিক্ষিত কিন্তু অপর ৩জন ডিপ্লমা ইন ফরেনসিক মেডিসিন, দাখিল বা স্নাতক পর্যন্ত পড়াশুনা রয়েছে।
একটি নগরের উন্নয়ন মানে শুধু ব্যাবসা-বানিজ্য নয়, শিক্ষা, কালচার, টলারেন্স এসব বিষয় যখন আসে তখনই কেবল আমরা গণতন্ত্রের স্বাধ পেতে শুরু করবো। যেমনটা আমরা ব্রিটেনের লন্ডনে দেখি। এই দেশের সমাজ, শিক্ষা ব্যাবস্থা, প্রশাসন, কালচার ইত্যাদি এমন ভাবে বেড়ে উঠেছে যে তারা লাখ লাখ নন-ব্রিটিশ, ইমিগ্রান্টদের তাদের সাথে ইন্টিগ্রেট করেছে। পেশি শক্তি, টাকার বলে কিংবা দলীয় লেজুড় বৃত্তির কারনে যখন লোকাল সরকার ব্যাবস্থা পতিত হয় তখন সেই নগরের বিকাশের পথে স্থায়ী তালা ঝুলে যায়।
যেমন আমরা দেখেছি সিলেটের উন্নয়নের কৃতিত্ব কে নেবে তা নিয়ে তর্ক হয়, আওয়ামীলীগ বলে তাদের সরকারের কাজ, বিএনপি দাবী করে তাদের মেয়রের কাজ। কিন্তু যে জনতা ভোট দিয়েছে, ট্যাক্স দিয়েছে তাদের আলোচনা না করে , তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে জনগনের চাকর তাঁর মুনিবকে ফেইবার করেছে এমন আচড়ণ বা বার্তা আমরা সর্বত্র দেখতে পাই।
পথভুলা নাগরিক সমাজকে তাদের অবস্থান থেকেই ভালো নাগরিক সৃষ্টি করার লড়াইটি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। নিজ অধিকার অন্যের হাতে বয়ে আসবে এমন ভাবা শুধু অহেতুক নয়, ভয়ঙ্কর ঝকিপূর্ণ।  ভুলে গেলে চলবেনা চোরের বাজারে চোখের জালায় নাক কাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সংখ্যার গরিষ্ঠতা দিয়ে আমাদের সেবা দিতে এসে যারা আমাদের প্রভু বনে যান এবং সেটাই গণতন্ত্র হিসেবে চালিয়ে দেন তখন আমাদের মনে রাখতে হবে গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত সচেতন, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তাই কন্সটেন্টলি আমাদেরকে সাদা মনের মানুষ খুজতে হবে, লড়তে হবে। হুইলের বিজ্ঞাপনে সাদা মনের মানুষ খোজে লাভ হবেনা। জীবন আছে তো আশা আছে। দেশ ও দশের জন্য আওয়ামীলীগ বা বিএনপি জরুরি নয়। জামায়াত তো নয়ই।
বেটার ট্রান্সপারেন্সি, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সুষম উন্নয়নের জন্য দলের উর্ধ্বে উঠে প্রাদেশিক বা অঞ্চল গত বিকাশ, উন্নয়ণে মনোনিবেশ করলে এই জনপদ এগিয়ে যেতে বেশিদিন লাগবেনা। আমাদের শিক্ষার প্রসারের সাথে ট্রাডিশনাল গ্রাম/মহল্লা শাষণ ব্যাবস্থা প্রবর্তন এক নতুন ডেমোক্রেসি পৃথিবীর সামনে উঠে আসবে। তাই সিষ্টেমের ভেতর থেকেই সংশোধনের এক যাত্রা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সেই লড়াইয়ে কিশোর-কিশোরী,যুবক-যুবতী, ধনি-গরীব সবাইকে একসাথে উতপাদনের ইকোনমি গড়ায় মনোনিবেশ করার বিকল্প নেই। ব্যাক্তির মোরাল কোড যার জন্য ধর্মের প্রয়োজনীয়তা একেবারে নেই বললেই চলে তাঁর প্রচার-প্রসার জরুরি। দিন বদলের জন্য আসমান থেকে কিংবা অদৃশ্য জগত থেকে কেউ নেমে আসবেনা। বদলে যেতে হবে আমাদের, বদলে দিতে হবে আমাদেরই। কথা বলার ও শুনার এবং চিন্তা করার জন্য যদি প্রজন্ম বেড়ে না উঠে তবে সেদিন আর বেশী দূরে নয় যখন আমরা বনের পশুর আরও কাছাকাছি আচড়ন শুরু করবো। নিজেদের জবাবদিহিতা নিজেদের কাছে...  

Thursday 26 July 2018

ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনাকে বলছি...



২০০১ সাল একটি অভিশপ্ত বছর। কারন গণতন্ত্রের বস্ত্র হরণ করা হয়েছিলো। প্রথমবার কোন হিন্দু মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিলো। খাম্বার ভেতর করে বাংলাদেশ পাকিস্তানে পাচার হয়েছিলো। জংগি জানোয়ার তার দাত বের করেছিলো। বাংলাদেশের মানুষ জামায়াত ও পাকিস্তানপন্থীদের ম্যারেজ ঘটিয়ে জাতীয় দাওয়াত মাহফিল করেছিলো।

এরপর বাংলাদেশে ২০০৮ নামে কোন সাল আসেনি। ২০১৪ সাল নামে কিছু কখনোই ছিলোনা। তবে ২০১৯ সাল নামে কিছু একটা আসছে। সেই ইলেকশনে একদল হারামজাদাদের দেখা মিলবে তাদের কথা বলতেই এই ইতিহাসের ঘাটাঘাটি।

২০১৪ সালে মানুষ নামে দুপায়ের প্রাণী ছিলেন ৯১৯৬৫৯৭৭ জন যাদের মাঝে বাংলাদেশি মানুষ হবার সিকৃতি পেয়েছিলেন ৪৩৯৩৮৯৩৮ জন। নির্বাচন নামে একটি খেলা আয়োজিত হয়েছিলো যেখানে ১৪৭টি আসনে মঞ্চায়িত সারকাসের ব্যাবস্থা ছিলো কিন্তু ১৫৪টি আসন কম্বল চোরদের কম্বলে হামিয়ে গিয়েছিলো।

রাবনের শুভাগমন উপলক্ষ্যে ৪২ দিনে ১৪২ জন মানুষের থেতলে দেয়া মাথা, ভাঙা হাত-পা, লগি-বৈঠা দিয়ে নেড়ে-চেড়ে লাল রক্তের ঘণ ঝোল দিয়ে কুলখানি করা হয়েছিলো বংগবন্ধুর স্বপ্নের।

মাত্র ২২% মানুষ সেই মেজবানের আয়োজক, অতিথি ছিলেন।

হারিয়ে যাওয়া ২০০৮, ২০১৪ সালের পর আর কোন দিন কোন মেয়ে-শিশু ধর্ষিতা হয়নি। কিংবা কারো যৌনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে হাসিনার সমান করা হয়নি। কোন ব্যাংক গায়েব করা হয়নি।

অসমাপ্ত...