সৌদি আরব ইয়েমেনে এই হামলা
চালানো বাবদ প্রতি মাসে ২৫ কোটি ডলার ব্যয় করছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এ
হিসাব দিয়েছে। অথচ সৌদি আরব নির্মাণ কোম্পানিগুলোর দেনা পরিশোধ করতে পারছে না। অথচ ৬৯.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ করে পৃথিবীর মাঝে সামরিক ব্যায়ের হিসেবে তৃতীয়
অবস্থানে অবস্থান করছে। এই আর্টিকেলেই উল্লেখ করেছি ২০১৫ সাল থেকে অদ্যাবদি আমেরিকা
ও ব্রিটেন ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলারের অস্ত্র বা মারনাস্ত্র সৌদি আরবকে সরবরাহ করেছে।
খুব সহজেই বিবেক-বিবেচনা সম্পন্ন মানুষ অনুধাবন করবেন যে বিশ্ব মোড়লগণ সৌদির
বিরোধীতা করবেই না উপরন্তু সব কিছুকে তারা সৌদির জন্য ম্যানেজ করবে। এমন বাস্তবতায়
আপনি কি করতে পারেন?
যে সকল দরিদ্র দেশগুলো
থেকে লাখ লাখ শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করতে যান তাদেরকে এই মহান সংগ্রামে আহবান করে
লাভ নেই উপরন্তু দরিদ্র মানুষ ও দেশগুলোতে এর প্রভাব মানুষের দূর্ভোগ আরও বাড়াবে।
কিন্তু আমি আপনাদের সামনে একটি প্রস্তাবনা করতে পারি যা সাপও মারবে আবার লাঠীটিও
ভাঙবে না।
আপনি জানেন কি, বিশ্বব্যাপি
১.৭ বিলিয়ন মুসলমানের মাঝে ২০১৭ সালে ২.৪ মিলিয়ন মক্কা আগমন করেন হজ্জ করার জন্য।
২.৪ মিলিয়ন মুসলমানের মাঝে ১.৮ মিলিয়ন মুসলমান ছিলেন সৌদি আরবের বাইরের অঞ্চল বা
দেশ থেকে। অপর দিকে একই বছর ৮ মিলিয়ন মানুষ উমরাহ করতে সৌদিতে এসেছিলেন।
আপনি জানেন কি, ২০১৭
সালেই হজ্জের মৌসুম ৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং উমরাহ খাত থেকে আরও ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার সৌদি
ইকনোমিতে যোগ করেছে যা হজ্জ ও উমরাহকে তেলের পর সবচেয়ে লাভ জনক আয়ের উৎস হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আপনি জানেন কি, সৌদি
সরকার তাদের ভীষণ ২০৩০ পরিকল্পনায় প্রতিবছর ৩০ মিলিয়ন উমরাহ পালনকারিকে আকর্ষিত
করতে চাইছে।
আপনি জানেন কি, মক্কা
চ্যাম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির মতে সৌদির প্রাইভেট সেক্টরের ২৫-৩০%
হজ্জ-উমরার উপর নির্ভরশীল এমনকি আরব রাষ্টগুলোর এভিয়েশন বিজনেসেও এই হজ্জ-উমরা
গুরুত্বপূর্ণ পালন করে।
আপনি জানেন কি, সৌদি
আরবের ন্যাশনাল রিয়েল এষ্টেট কমিটি আশা করছে হজ্জ-উমরা থেকে আগামি পাঁচ বছরের মাঝে
১৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করতে সক্ষম হবে এবং হজ্জ-উমরা কেন্দ্রিক ১০০০০০ স্থায়ী জব
ক্রিয়েট করবে।
উপরের তথ্যগুলোকে যদি
একটু সতর্ক ভাবে বিবেচনা করেন তবে সহজেই আপনি আমাদের সাথে একমত হবেন একমাত্র সৌদি
আয়ের উৎসে যদি আমরা কম্পন সৃষ্টি করতে পারি তবেই উট পাহাড়ের নিচে আসবে।
এবার আমরা যদি আপনাকে
পৃথিবীর কয়েকটি দেশের নাম স্মরণ করিয়ে দেই তবে আপনাদের স্মরণে আসবে ইকনোমিক্যাল
সেঙ্কশন কিভাবে তাদেরকে নতজানু করেছিলো। সাদ্দামের ইরাক, খোমেনির ইরান, কিম জং
উনের নর্থ কোরিয়া, এরদোগানের তুরস্ক, পুতিনের রাশা, তালেবানদের আফগানিস্তান কাছের
ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ সমূহ। আমরা আশা করছিনা সৌদি আরবকে তাঁর প্রভুরা
এমন কোন ইকনোমিক্যাল সেঙ্কশন প্রদান করবে
কিন্তু আপনি পারেন সৌদি আরবকে আরও মানবিক হতে, মানুষের মর্যাদা প্রাদানে বাধ্য
করতে, অন্যায় ও অযৌক্তিক ভাবে মানুষ হত্যা
থেকে বিরত রাখতে। তাই যদি মুসলিম প্রদান
দেশগুলো এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মুসলমানগণ যদি ২০১৯ সাল থেকে ৫ বছরের জন্য
হজ্জ-উমরা সাময়িকভাবে রহিত করেন তবে আপনার টাকায় আর কোন ইয়েমেনিকে
তাঁর প্রাণ হারাতে হবেনা। কোন শিশু পানিয় কেনার সময় কোন ঘাতক বোমায় তাঁর শরীর
ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হবে না। আমি নিশ্চিত আপনার আল্লাহ আপনার মনের কথা জানেন, আপনার
সামর্থ-ইচ্ছা তাঁর অজানা নয় তাই পাচটি বছর যদি এক জালিমকে শিক্ষা দিতে আপনি
হজ্জ-উমরা না করেন তাতে আপনি বা আপনার আল্লাহর কিছু কমতি হবেনা। আর যদি কোন ঈশ্বর
মানুষকে রক্ষায় ব্যার্থ হবার পরও কোন মানবিক ইনিশিয়েটিভের কারনে অফেন্ডেড হন তবে তাঁর
ঈশ্বর ভাবনায় রয়েছে ভয়াবহ আত্মতৃপ্তির উন্মাদনা।
আসুন সবাই একটু মানবিক
হই। মানুষের জন্য মানুষ হয়ে ভাবি। যদি মানুষই না থাকে তবে খোদার খোদায়ি দিয়ে কি
হবে?