Monday 30 January 2017

মাদ্রাসা ও জঙ্গিবাদ-১১

আমার প্রথম ই-বুক
মাদ্রাসা ও জঙ্গিবাদ। 


পৃথিবীর সব দেশেই ভীন্ন ভীন্ন মানুষের মাঝে কলহ হয়ে থাকে, কলহের কারনও নানাবিধ হয়ে উঠবে কিন্তু যখন কোন দেশের মানুষ সংখ্যার বিবেচনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সংখ্যা লঘিষ্ঠ মানুষকে নির্যাতন করবে তখন আর তা মানুষের কাজ বলে বিবেচনা করা যায় না। এই অপরাধগুলো সম্পর্কে যদি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী এমন হয় যে এসব স্বাভাবিক বা হতে পারে বা গ্রহণ যোগ্য কিংবা এই দেশে দেশেও হচ্ছে বা হয় তখনই জাতীর বিবেকদের জেগে উঠতে হবে কেননা এমন চিন্তা মানুষকে যুক্তির বিপরীতে বিশ্বাসের বল দিয়ে কাজ করায়। যে কোন ঘটনার পেছনে কারন বা ইন্দন থাকতে পারে কিন্তু তা কোন ভাবেই অন্য আরও একজন মানুষকে নির্যাতনের বৈধতা দেয়না।
একটি ক্লাসিক উদাহরণ থেকে বাঙ্গালী মুসলমানের দ্বিখণ্ডিত হিপোক্রেট মনের লুকিয়ে থাকা দিক আরো ভালো বুঝা যাবে, বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষের মাঝে হিন্দু মানুষের প্রতি এক গোপন ক্ষেদ, অপসন্দ ভাব , নীচু চিন্তা, বিরাজ করে। বৃটিশ আমলে হিন্দু এলিট শ্রেণীর কায়েমী স্বার্থে সংশ্লিষ্ঠ বর্বর কাজের জন্য হিন্দু বিদ্বেষ থাকা সত্ত্বেও হিন্দু মুসলমান সবাই ধর্মাচার না করা মানুষ সইতে পারেন কিন্তু নাস্তিকতা সইতে পারেন না। একই সমাজে বসবাস করা মানুষদের মাঝে এমন চিন্তার মিল থাকা স্বাভাবিক হলেও এঁকে অপরের প্রতি গোপন অবিশ্বাসের বাসার বুনিয়াদ গাথা হয় অন্য কোন খানে...
আমাদের সমাজের পাড়ার মসজিদে প্রতি সপ্তাহে, বিশেষ দিবস সমুহে, পালা করে বিদ্বেষের যে জপ মানুষের কানে তুলে দেয়া হয় তা সমাজের ভেতর অসহনশীলতার স্থায়ী আবাস গড়ে। সেই অসহনশীলতা থেকে মেজরিটির একটি অংশ যখন দেখে ভোগবাদ তাঁর বিশ্বাসকে গ্রাস করছে তখন সে তুলনামূলক ভাবে আরও গোড়া এপ্রোচের দিকে ধাবীত হতে থাকে।
বাংলাদেশে যারা মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় সমাজের সবচেয়ে ননরিকগনাইজ অংশের সাথে জড়িত থাকায় এবং কোরআন হাদীসের ভেতর থাকা এলিমেন্ট যা তাকে আল্লাহর আইনের রাষ্ট্র গঠনে হরদম ডেকে যায় তাঁর মিলনেই স্বশস্ত্র বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতে থাকে।

মাদ্রাসা ও জঙ্গিবাদ-১০

আমার প্রথম ই-বুক
মাদ্রাসা ও জঙ্গিবাদ। 



বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ পৃথিবীর অন্যান্য ভূ-খন্ডে জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিবাদের গতি প্রকৃতি কিংবা স্বভাব এক নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, সোভিয়েত রাশিয়াতে যে সকল সন্ত্রাস হয়েছে তা রাষ্ট্রের নিপীড়নের মুখে সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ-প্রতিরোধে মানুষের মাঝে ঐক্য সৃষ্টি বা সংগঠিত করতে ধর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আবার চীনে উইঘুর জাতীকে যখন জাতী হিসেবে নির্যাতন করা হয়েছে তখন তাদের মাঝের একদল সেই নির্যাতনের প্রতিরোধে ধর্মকে আশ্রয় কিংবা প্রেরণা হিসেবে নিয়েছেন। ফিলিস্তিন কিংবা মায়ানমার বা  আফ্রিকার কোন কোন দেশে যে সহিংসতা হচ্ছে তার পেছনে ধর্মকে যেভাবে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে বাস্তবে সংঘাতের পেছনে জাতী এবং দখলদারদের উৎখাত হবার মনোজগতের ভয় মূল কারন হলেও তা সামনে আসে না। ভারতে একমাত্র ব্যাতিক্রম যেখানে শুধু মুসলমান পরিচয়ের কারনে মানুষকে নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়।
বাংলাদেশের মুসলমান যারা ৫৬হাজার বর্গ মাইলের এই দেশে ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে সংখ্যা গরিষ্ঠ, এই জনপদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে মুসলিম আইডেনটিটি এখানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বন্ধুর পরিবেশে পতিত নয়। বরংচ মুসলমান সংখ্যা গরিষ্ঠতা এখানে সংখ্যা লঘুদের নির্যাতনের জন্য কারো কারো কাছে একটি আচ্ছাদন। বাংলাদেশের রাজনীতি বিশেষত ইসলাম ধর্মের সাথে তাদের সুসম্পর্ক নিশ্চিত করেই পরিচালিত হওয়াতে এই -দ্বীপের ইসলামিক জঙ্গিবাদ ভীন্ন রুপ আর স্বভাব নিয়ে মানুষের মাঝে ছড়িয়েছে।
বাংলাদেশে প্রায় প্রত্যেক মুসলমানের সাথে কথা বললে দেখা যাবে তাদের মনে পৃথিবীর নানা প্রান্তে বিশেষত ফিলিস্তিন, কাশ্মির, ভারতে নিপীড়িত মুসলমানদের জন্য গভীর গোপন মর্ম পীড়া রয়েছে।