Tuesday 31 December 2019

নতুন দিনের রেজুলেশন

ভোর তো হয়েই গেলো , নতুন দিন, নতুন ক্যালেন্ডার, নতুন মাস, নতুন বছর। স্বাগত ২০২০ লিখা দেখে ভাবি কে কাকে স্বাগত জানায়! এক মানুষ আরেক মানুষকে হায়-বাই বলেনা বিনা লাভে! সেই সমাজে কারনে-অকারনে ভালোবাসা পেতে শুভেচ্ছা পেতে অনেকের ভালো লাগতে পারে। আমি যখন নাগরিক হয়ে উঠিনি তখন আমরা এক ধরণের রেজুলেশন রেজুলেশন খেলতাম। এই বছর এই কাজগুলো পরিত্যাগ করবো আর কাজগুলো করতে সচেষ্ট থাকবো।  মহল্লার কোন কোন বড় ভাইদের নতুন বছরের প্রথম দিন উপলক্ষে মৌজ-মস্তি করতে মাঝরাত পেরিয়ে আড্ডা দিতে দেখতাম। কাউকে ভাবতে দেখিনি এটা ইংলিশ (খ্রিষ্টীয়) নিউ ইয়ার, বাহানা যেখানে উদ্দেশ্য উপলক্ষ্য সেখানে মুখ্য নয়।  ইদানীং ফেইসবুকে অনেকেই লিখছেন বাংলা নববর্ষের দিনে কি ইংলিশ নববর্ষের দিনে লাড়কি আঁখ মারেগান শুনে তারা কিঞ্চিত অপ্রস্তুত হচ্ছেন (মনে মনে) … 
মানুষ জাগছে, বিনা কারনে বিনা প্রয়োজনে মাঝরাতে মাইকে ওয়াজ-মাহফিল নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলছে (মনে মনে), মিটিঙয়ের সময় আজানে কেউ বিরক্ত হয়ে বিনা মাইকে আজান দেয়ার কথা বলছে (নিচু স্বরে)
ভেবেছিলাম মানুষ সব মরে গেছে, আছে কিছু তার ছায়াকিন্তু সাকি থেকে নুরু হয়ে আবরার কিংবা কোন পাটকল শ্রমিক অথবা ইশকুল শিক্ষক নামে এক ধরনের রেয়ার ব্রিড মানুষ এখনো আছে। সোশ্যাল মিডিয়া নামে একটা কিছু না থাকলে জানতাম না তাদের। সেদিন একজন বললে, ভারতের একদল মহিলা আছেন যারা কোন বাড়িতে কোনজন মারা গেলে তাদের হয়ে কান্নাকাটি করার সার্ভিস প্রদান করেন আর ঠিক তাদের মতোই নুন খেয়ে বা না খেয়ে গুণ গাইতে আমাদের দেশেও একদল মানুষ আছে। ভাববেন না আমি টিভিতে মুখ দেখানো পেইড পণ্ডিতদের কথা বলছি। এই বলাকেও কিন্তু নেগেটিভলি দেখা যাবেনা! কেউতো কিছু বলছেএটাই কম কিসে?! 
নিরন্তর মানুষ হয়ে উঠার ইচ্ছা লড়াইটা আমাদের করতে হবেই, জানতে আমাদের হবেই, প্রশ্ন আমাদের করতে হবেই, নতুবা একটা ভোর আসবে যে ভোরে আপনি নিজের চেহারা নিজেই দেখে চিনবেন না, ভয় পেয়ে যাবেন, লজ্জায় মাথা তুলতে পারবেন না, যেমন পৃথিবী আপনি পেয়েছিলেন তা আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে দিয়ে যাচ্ছেন না, বেটার পৃথিবীর কথা নাই বা বললাম। 

বছর দুই-এক আগে প্রয়াত ইতালির একজন স্বনামধন্য একাডেমিক  Umberto Eco ১৯৯৫ সালে “Ur-Fascism” শিরোনামে  একটি অসাধারণ লিখা লিখলেন তার এই লিখা থেকে আমাদের জামানার ফ্যাসিষ্ট চেনার একটা তরিকা বাতলে দিলেন বা  চিহ্ন সমূহ আমাদের সামনে তুলে ধরলেন। মনে করুন আপনার হাইস্কুলের লিট্মাস টেস্টের মতো সহজে চেনার মতো নিদর্শন বাতলে দিলেন। নিচের লিঙ্কে সেই লিখাটি পুরোপুরি পড়তে পারবেন, https://www.pegc.us/archive/Articles/eco_ur-fascism.pdf

" 1.The cult of tradition. “One has only to look at the syllabus of every fascist movement to find the major traditionalist thinkers. The Nazi gnosis was nourished by traditionalist, syncretistic, occult elements.”
2.The rejection of modernism. “The Enlightenment, the Age of Reason, is seen as the beginning of modern depravity. In this sense Ur-Fascism can be defined as irrationalism.”
3.The cult of action for action’s sake. “Action being beautiful in itself, it must be taken before, or without, any previous reflection. Thinking is a form of emasculation.”
4.Disagreement is treason. “The critical spirit makes distinctions, and to distinguish is a sign of modernism. In modern culture the scientific community praises disagreement as a way to improve knowledge.”
5.Fear of difference. “The first appeal of a fascist or prematurely fascist movement is an appeal against the intruders. Thus Ur-Fascism is racist by definition.”
6.Appeal to social frustration. “One of the most typical features of the historical fascism was the appeal to a frustrated middle class, a class suffering from an economic crisis or feelings of political humiliation, and frightened by the pressure of lower social groups.”
7.The obsession with a plot. “The followers must feel besieged. The easiest way to solve the plot is the appeal to xenophobia.”
8.The enemy is both strong and weak. “By a continuous shifting of rhetorical focus, the enemies are at the same time too strong and too weak.”
9.Pacifism is trafficking with the enemy. “For Ur-Fascism there is no struggle for life but, rather, life is lived for struggle.”
10.Contempt for the weak. “Elitism is a typical aspect of any reactionary ideology.”
11.Everybody is educated to become a hero. “In Ur-Fascist ideology, heroism is the norm. This cult of heroism is strictly linked with the cult of death.”
12.Machismo and weaponry. “Machismo implies both disdain for women and intolerance and condemnation of nonstandard sexual habits, from chastity to homosexuality.”
13.Selective populism. “There is in our future a TV or Internet populism, in which the emotional response of a selected group of citizens can be presented and accepted as the Voice of the People.”
14.Ur-Fascism speaks Newspeak. “All the Nazi or Fascist schoolbooks made use of an impoverished vocabulary, and an elementary syntax, in order to limit the instruments for complex and critical reasoning.”


প্রায় আটমাস চেষ্টা করে এই লিখা লিখতে সাহস করতে পেরেছি, কিভাবে কাপুরুষ থেকেও লিখে ফেলতে পারি তা ভেবেছি, অবশেষে সক্ষম হলাম। অনুগ্রহ করে বাংলা করে পড়ে নিবেন। আর মস্তিষ্কের লিট মাস পেপারে ১৪টি স্ট্রিপ ব্যাবহার করতে ভুলবেন না। বের করে ফেলুন টি মিলে গেছে আপনার নজরে। যখন সব অনুধাবন করে ফেলবেন সেদিন থেকে ভাবতে শুরু করবেন। আর সেটাই হবে আপনার বেষ্ট নিউ ইয়ার রেজুলেশন… 


আসমান ভেদ করে কিংবা জমিন উগরে কোন ত্রাণকর্তা ত্রাতা আসবেনা আপনার আমার দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র ফিক্স করতে। ভাগ্যবান ভগবান স্বর্গের আরাম ছেড়ে কেন আসবেন, আপনার জন্য কষ্ট করতে?! ভাবুন, একবার ভাবুন। প্রশ্ন করুন, মায়ার জাল ছিঁড়ে ফেলুন। 


এই লিখা উৎসর্গ করলাম ভারতের পার্লামেন্টারিয়ান মহুয়া মৈত্রাকে শ্রদ্ধা করে। 


Friday 13 December 2019

নিজের পায়ে কুড়াল মারা জাতির প্রতি...





রাত তখন ২টা, বৃটিশরা বলেন সকাল ২টা। এক্সিট পোল থেকে নিরাশা দিয়ে শুরু করে এক সময় নিজের ভেতরই আওয়াজ পেলাম এবারো হবেনা। গণ- মানুষের সরকার আসবেনা। এরপরও যদি কিছু হয়ে যায়, হয়ে যাক এমন আশা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে উঠে মন খারাপের দিন শুরু করলাম।
কেন জেরেমি করবিন সরকার ফর্ম করতে পারলেন না, কি কি মহাপাপে তিনি পাপি ছিলেন তা খুড়ে খুড়ে বের করতে প্রেস্টিটিউটরা কঠোর পরিশ্রম শুরু করে দিয়েছেন এবং আরও করবেন।
এই ইলেকশন একটি প্রশ্ন নিশ্চিত দাড় করাবে, গণপ্রতিনিধিগণ কি জনগণের বাবা হয়ে উঠা বন্ধ করে তাদের সার্ভেন্ট হয়ে উঠবেন কিনা? যে সার্ভেন্ট শুধুমাত্র তাই করে যা তার মুনিব চায়! গণপ্রতিনিধিগণ কি পপুলিজম আর মিথ্যার বেসাতীর পসরা সাজিয়ে কর্পোরেটদের সেবা দাশ হতে সচেষ্ট হবেন? যদি এমনটা হয় ভবিষ্যতের রাজনীতি তবে তার দায় কার?
জনগণ কি তাদের পায়ে মারা কুড়ালের প্রায়শ্চিত্ত করতে জেগে উঠবে কোনদিন ? নাকি একধরণের জাতীয় উদাসীন এবং প্যারালাইজড স্তরে পৌছাবে।
ভারতের মোদি ও বিজেপি, আমেরিকার ট্রাম্প ও রিপাবলিকান, ব্রিটেনের বরিস ও কনসারভেটিভ তখনই সফলতা পেয়েছে যখন তারা মেজরিটিকে গ্রান্টেড করে নেয়নি এবং মেজরিটিকে শুনেছে। বাংলাদেশেও তাই হবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র।
সন্তানের ভালো সকল বাবা-মা চান তারপরও কোন কোন সময়ে সন্তানদের উপর তাদের ভালোর জন্য সিধ্বান্ত চাপিয়ে দিলে তা বুমেরাং হয়ে যায়...এই ইলেকশন তারই সমার্থক ছবি। ব্রেক্সিট ব্রিটেনের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবেনা... “টেইক বেক কনট্রোল” নামের আকর্ষক ফ্রেইস শুধুমাত্র কথাতেই, একই রকম “গেট ব্রেক্সিট ডান”।
মানুষেরও সবকের প্রয়োজন আছে। তবে টাইম বোমা বা পিন ছাড়া গ্রেনেড হাতে নিয়ে ঘুরলে শুধু যে বহনকারি খতম হয় তা কিন্তু নয়, তার আশ-পাশের দোষী বা নির্দোষ সকলেই ধ্বংসের স্বাধ লাভ করে।
সব শেষ প্রশ্ন, কেমন নেতা চাই? এই প্রশ্নের ট্র্যাডিশনাল যে উত্তর আছে তা শুধুই কেতাবি... মানুষ এমন নেতা চায়, যে থুরাসা বদমাশ, থুরাসা বেইমান, থুরাসা খুরুস আর থুরাসা ইনসান। কারন ভালোর অস্তিত্বে তারা বিশ্বাস ধরে রাখেননি। পলিটক্সের এই খেলায় আজ জনগণও জানে, এই গেইম বেইমানির...