Sunday 5 February 2017

চেতনায় গণজাগরণ।

গতকাল ছিলো কাদের মোল্লার প্রথম রায়ের দিন, গতকাল ছিলো গণজাগরণ মঞ্চের (শাহবাগ, ঢাকা, বাংলাদেশের) প্রথম দিন, গতকাল ছিলো এক নতুন দিনের সম্ভাবনার সূচনার সম্ভাব্য দিন, গতকাল ছিলো বাংলাদেশ বদলে যাবার অন্য আরেক রকম প্রথম দিন।
গতকাল আইসিএসএফ’র ফেইজবুক পেইজে শেয়ার করা শাহবাগের উপর নির্মিত একটি টাইম ল্যাপস ভিডিও আমি শেয়ার করলে আমার আজীবনের বন্ধু অলি আমার কাছে জানতে চেয়েছে আমার মূল্যায়ণ কি?
আগামী ৮  ফেব্রয়ারি  গণজাগরণ মঞ্চ লন্ডন,ইউ কে’র প্রথম দিন, পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম একটা স্পেশাল রেডিও শো করবো। ঠান্ডা লেগে এই সপ্তাহে অনুষ্ঠান করার অবস্থা আর নেই তাই আগামী সপ্তাহে করবো কিন্তু এর মাঝে  আবার আমার রেডিও শো আর্টিকেল ওয়ান নাইন আসতে আসতে ৮ তারিখ চলে যাবে আর আমার বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে আজকের এই লিখা।
শাহবাগকে মূল্যায়ণ করার আগে আমি নিজেকে একটি ছোট মূল্যায়ণ প্রক্রিয়ার মাঝে নিয়ে যেতে চাই, কিছু প্রশ্ন আমাকে করতে চাই? (প্রিয় পাঠক এই প্রশ্নগুলো আপনিও নিজেকে করুন এবং নিজেকে নিজের উত্তর দিন)
আমি যে ব্যাবস্থায় পড়াশুনা করেছি, আমি যে সমাজে বেড়ে উঠেছি, আমি যে সময়ে বসবাস করেছি, আমি যে রাজনীতির (ইসলামিক ও নন ইসলামিক)  স্পর্শে এসেছি  সেখানে আমাকে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামিলীগ, জামায়াত, রাষ্ট্র, সমাজ এসব কে সেখানে কিভাবে দেখা হয়, কিভাবে আমরা সেগুলোকে অবজার্ভ করেছি? আমি কি উদাস কিংবা হতাশ অথবা প্যাশনেট ছিলাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্র, সমাজ, ধর্ম, রাজনীতি নিয়ে?
আমার শৈশব-কৈশরে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জ্ঞান ছিলো, আমাদের এলাকার মোখলেস চাচা মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার কতৃক খুনের জন্য নেয়া লাইন থেকে হাতে একটি গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঁচে গেছেন, আব্দুল  কাদির (বাট্টি কাদির চাচা, মাফ করবেন জাষ্ট মোর স্পেসিফিক হতে লিখতে বাধ্য হলাম) মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন কিন্তু এই প্রচারের কথা কেউ বিশ্বাস করতে চাইতো না, একুশে ফেব্রয়ারিতে কখনো কখনো রাতের প্রথম প্রহরে ফুল দিতে যেতাম, দিনে ফুল দেখতে যেতাম, বিজয় দিবসে সিলেট স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ বা বিভিন্ন ডিসপ্লে দেখতে যেতাম, টিভিতে বিজয় দিবসের জন্য আয়োজিত ডিসপ্লে দেখতাম তবে কখনোই পুরো অনুষ্ঠান দেখিনি। টিভিতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা দেখেছি, পাঠ্য বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের উপর কোন চ্যাপ্টার ছিলোনা, প্রাইমারি ও হাইস্কুলের বইতে যে সব রচনা ছিলো তা আমি রোমাঞ্চিত হয়ে পড়তাম, নিজেও কল্পনা করে মুক্তিযুদ্ধের কোন এক অপারেশনের উপর গল্প লিখতে চেষ্টা করেছি,  জামাত-শিবিরদের রাজাকার বলা হতো এটা জানতাম ইনফ্যাক্ট এই প্রশ্ন এলাকার  শিবিরের বড় ভাইদের করেছি কেন তাদেরকে রাজাকার বলা হয়, শুনতাম পাকিস্তান আমলে আমাদের বর্ডারে ভারতীয় বাহিনী খুব ভীত থাকতো, রাস্তায় এম্বুলেন্স আসলে সবাই রাস্তা ছেড়ে দিতো, ভারত ষড়যন্ত্র করে তাদের সুবিধার জন্য  আমাদেরকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছে, আওয়ামিলীগ ভারতের অনুগত দল।
 আমার নতুন যৌবনে এসে যখন ঘর ছাড়লাম, পড়তে শুরু করলাম, প্রশ্ন করতে সাহসী হলাম তখন আনিসুল হকের মা পড়ে অঝর ধারায় কেদেছি, রাতের পর রাত শুধু পড়েছি ধর্ম, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, ইতিহাস, ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ, প্রতিশোধের জন্য হাতের মুষ্ঠি বন্ধ করেছি, প্রকৃত স্বাধীনতা আসেনি এই বিশ্বাস নিয়ে সমাজ রাষ্ট্র বদলে দিতে বাম রাজনীতির সংস্পর্শে এসেছি, এলাকা ও নিয়মিত পরিচিত জনের বাইরে ক্যাম্পাসে  ছাত্রলীগের সাথে ছিলাম, ছাত্রলীগের জন্য কাজ করেছি, দেখলাম মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামিলীগের রাজনীতির তুরুপের তাস।
কোথাও মুক্তিযুদ্ধ নেই, মানুষের মুক্তি নেই। কে রাজাকার আর কে মুক্তিযুদ্ধা, দলমত নির্বিশেষে চোর-ডাকাত আর করাপ্টেড লুটেরাদের মহাসমাবেশ। দিন বদল হয়না সাধারণ মানুষদের, আমি বদলে যাই, আমার পারিবারিক বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করতে থাকি, বিরক্ত হতে হতে হতাশ হয়ে উঠি আমাদের রাজনীতি থেকে। আমি উদভ্রান্ত ,গন্তব্যহীন এক যুবক।
আপনার অবস্থা কি ছিলো? মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামিলীগ এর বানিজ্যিকিকরনের চূড়ান্ত আয়োজন, এন্টাই আওয়ামিলীগ বা এন্টাই মুক্তিযুদ্ধ গ্রুপ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সংশয়, অসত্য তথ্যের প্রচার আর্থসামাজিক বাস্তবতা আমাদের এক ভয়ঙ্কর আলেয়ার মাঝে পতিত করেছিলো।
আমি বিশ্বাস করিনি আওয়ামিলীগ শেষ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধ বা আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার করবে বা প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে। আমাদের সাথে আমাদের শাসকদের সম্পর্ক অবিশ্বাসের আর দাশ ও মুনিবের। যে বা যারা ক্ষমতায় যায় তারা ইতিহাস নিয়ে নিজ প্লে রচনা করে।
অনেক জলপনা আর কল্পনার অবসান ঘটিয়ে যখন আওয়ামিলীগ বিচার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তখনও মানুষ বিভিন্ন প্রচারে প্রভাবিত এবং সংশয় আর ভয় নিয়ে দিন গুজরান করছিলো।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল যখন আব্দুর কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিচারের রায় ঘোষণা করলেন আর একই সময়ে গঠিত হলো গণ জাগরণ মঞ্চ। যুদ্ধাপরাধী বা আন্তর্জাতিক অপরাধে অপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে জমায়েত হওয়া গণজাগরণ মঞ্চ পরবর্তীতে “জামায়াত কে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করন” জামায়াতের সাথে এফিলিয়েটেড প্রতিষ্ঠান বয়কট করা সহ আরো কিছু দাবী নিয়ে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকে।
গণজাগরণ মঞ্চের সমান্তরালে আরো একটি প্লাটফর্ম দাড় করানোর চেষ্টা চলতে থাকে হেফাযতে ইসলাম ব্যানারে। সমস্ত বাংলাদেশ যে বিচারের দাবীতে এক ব্যানারে থাকার কথা সেখানে সেই বিচারকে ধর্ম আর অধর্মের লড়াইয়ে নামায়ন করতে সক্ষম হয় পর্দার আরালের কূশলীবেরা।
একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি কিভাবে গণজাগরণ কে দেখেছি বা দেখতে চেয়েছি? আমি আজ গণজাগরণকে কিভাবে দেখি? ইতিহাস গণজাগরণ কে কিভাবে দেখবে?
শাহবাগকে মূল্যায়ন করার আগে সংক্ষিপ্ত ভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার নিয়ে আমার অবস্থা পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরী। আমি মনে করি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় যে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাঁর বিচার আয়োজন একটি অসাধারণ মহান ঘটনা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিচার আয়োজন একটি জাতীয় দায়কে কিঞ্চিত হলেও শোধ করার ফার্ষ্ট স্টেপ। বিচার, আইন, ন্যায় বিচার, সঠিক প্রক্রিয়া, সমান সুযোগ সুবিধা বা এমন তর জটিল আলোচনার জন্য আমি সঠিক ব্যাক্তি নই, আইন সম্পর্কে আমার যথেষ্ট জ্ঞান নেই। আমি মনে করি বিচারের এই প্রক্রিয়া জারী থাকুক এবং যদি কোথাও কোন পয়েন্টে যে কোন সরকার মনে করে কোথাও নিয়মের ব্যাতয় ঘটেছে অথবা কোথাও কিছু অসম্পূর্ণ রয়েছে তবে যে প্রক্রিয়ায় এই আইন হয়েছে আমাদের দেশ, আমাদের সংবিধান মেনে সেই ধারায় যে কোন পরিবর্তন আনা হোক, প্রয়োজনে রেক্টিফাই করা হোক। বিচার চলতে থাকুক, বিচার হোক।
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ আমাদের জন্য একটি জাতীয় অর্জন। আমি মনে করিনা, সরকারের কূটচালে গণজাগরণের সৃষ্টি। শাহবাগ আমাদের দেখিয়েছে, আমরা দেশের প্রশ্নে আওয়ামিলীগ, বিএনপি, হিন্দু, মুসলিম, আদিবাসী, আস্তিক, নাস্তিক নামের ব্র্যাকেট ভেদ করে জড়ো হতে পারি। আমরা সেই সব গলদকরন করিনা যা আমাদের নীতিহীন সরকার আর রাজনীতিক প্রতিষ্ঠান আমাদের গেলাতে চায়। আমাদের যুবক, আমাদের তরুণ আগামীর বাংলাদেশের জন্য এখনো দাড়াতে সক্ষম।
আমি জানিনা আমার মতো কতো মানুষের মনে গণজাগরণের প্রতি অব্যাক্ত হাজার আশা ছিলো। আমি ভেবেছিলাম যে জোয়াড় এসেছে সেই জোয়াড়ে হয়তো আমরা আমাদের অসুস্থ সরকার ব্যাবস্থা, নষ্ট হয়ে যাওয়া রাজনীতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পেছনে ফেলে সত্যিকারের গণজোয়াড় সৃষ্টি হবে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা আর কর্ম সংস্থানের এক নতুন সংগ্রাম শুরু হবে যা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে গৌরবের স্থানে যার জন্য আমরা স্বাধীনতা এনেছিলাম।
বাস্তবতা ভীষণ কঠীন, অনেক কিছু বলা বা আশা করা সহজ কিন্তু কিছু করা সত্যই অনেক কঠীন। এই পরিবর্তন অনেকটা মহা যুদ্ধের মতো, এখানে শুধুই ফাইনেস্ট অস্ত্র বা শুধুই ফাইনেস্ট সোলজার বা  শুধুই ফাইনেস্ট ওয়্যার জেনারেল দিয়ে  জয় লাভ করা সম্ভব নয়। ২০১৩ সালের এই আপরাইজিং এ সব থাকার পরও আমরা সেই বেনিফিট ঘরে তুলতে পারিনি। সব ছিলো কিন্তু ভীশন, ভীশনারী লিডারশীপ বা সংক্ষেপে স্ট্যাট্ম্যানশীপ গুনের  ড্রাইভ না থাকায় আমাদের অর্জন একটি সার্কেলে বন্ধি হয়ে পড়েছে এমনকি কোথাও কোথাও আমাদের স্বপ্ন চুরি হয়েছে।
প্রতিটি জেলা, উপজেলা, থানাতে যে জাগরণ এসেছিলো তাঁর উষ্ণতা, তাঁর ডাক পৌছে দিতে আমরা ভীত ছিলাম, আমাদের ভেতর সংকোচ ছিলো। রামুর ঘটনায় আমরা সাড়া দিতে পারলেও আমরা স্বজাতীর এক অবহেলীত অংশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষিতদের সাথে সংলাপ জুড়তে পারিনি। আমাদের স্বপ্ন তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারিনি। আমরা ভ্রষ্ট রাজনীতির কূটচালে জড়িয়ে পড়েছি। আওয়ামীলীগ তাদের রাজনীতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিচার, গণজাগরণ এবং হেফাযতকে সফল ব্যাবহার করলেও আমরা সাহসী হয়ে পরিবর্তনের ডাক দিতে পারিনি। আমরা সকল রাজনীতিক প্রতিষ্ঠানে আমূল সংষ্কারের ডাক দিতে পারতাম, আমরা বিচার ব্যাবস্থাকে স্বাধীনতা, পুলিসকে পেশাদার দায়িত্বশীল করার আহবান, সেক্যুলার করার ডাক দিতে পারতাম, আমরা দূর্ণীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের দাবী তুলতে পারতাম।
গণজাগরণ মঞ্চ কি এগুলো চায়না? অবশ্যই চায় কিন্তু নষ্টদের দখলে যাওয়া একটি দেশ শুধু চাওয়া দিয়ে পরিবর্তন আসেনা, প্রয়োজন এক বোল্ড শেক আপের। গণজাগরণ হতে পারতে সমস্ত বাংলাদেশের লোকাল ভ্যানগার্ড।
গণজাগরণের এই যাত্রা সহজ ছিলোনা, ইষ্টাব্লিষ্টমেন্টের এগেইনস্টে স্ট্যান্ড করা, ডাইলিউটেড রিলিজিয়াস ইনটলারেন্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সহজ নয়। যখন তারা দেখেছে তাদের ভীত শেক করে দিতে আরে গণজাগরণ মঞ্চ তখন তারা গণজাগরণের পাঞ্জাবি নিয়ে, তাদের সেক্সুয়ালিটি নিয়ে কথা বলেছে, তাদের ক্যারেক্টার এসাসিনেশনে নেমেছে, ষড়যন্ত্রকারীরা ইনফিলট্রেট করেছে।
সব কিছুর পরও যা স্বীকার করতেই হবে গণজাগরণ সারা দেশের লাখো তরুণ, যুবকের কাছে মুক্তিযুদ্ধকে রিডিফাইন করেছে, মস্তিষ্কে আমাদের অস্তিত্ত্বে বাংলাদেশকে সদা জাগ্রত চেতনা হিসেবে স্থাপন করে দিতে প্রথম স্পার্কটি করে দিয়েছে।
আমি শুধু একটি কথাই বলতে পারি অনেক বেদনা নিয়ে, সত্যিকারের এক দিন বদলের মশাল আমরা হারিয়েছি। আশা এতোটুকুই যে স্পার্ক আমি দেখেছি আমি নিশ্চিত তা আসবে, আবার আসবে। কারন আমরা লড়াইকে ধারন করেছি নিজ মর্যাদায়।

গণজাগরণ মঞ্চ ঢাকায় যখন প্রতিষ্ঠিত হয় আমি তখন লন্ডনে, এখানে গণজাগরন মঞ্চের হাওয়ায় আমরা জেগে উঠেছিলাম। সেদিন ছিলো ৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। আমার আর আব্দাল ভাইয়ের উইকলি রেডিও শো “দিস উইক উইথ আব্দাল উল্লাহ” ছিলো সেদিন, আব্দাল ভাই ছিলেন না, আমি শো হোষ্ট করছিলাম। তাঁর আগের দিন ছিলো আমার শো “স্বাধীনতার কথা”। মানুষ জমায়েত হতে থাকে হোয়াইট চ্যাপেল এরিয়ার “আলতাব আলী পার্কে”। আমি রেডিও থেকে চলে গেলাম আলতাব আলী পার্কে। পার্কের এক পাশে বিচারের পক্ষের মানুষ অপর দিকে শহীদ মিনারের দিক দখল নিয়ে আছে বিচারের বিপক্ষের মানুষ। দুপক্ষেই মানুষ বাড়তে থাকে। শ্লোগান দিয়েছি, অনেক মানুষ, অনেককেই আমি চিনিনা, কিন্তু কোন সংকোচ নেই, কেউ একজন শ্লোগান ধরছে আমরা গলা মেলাচ্ছি আবার কোন এক সময় আমি শ্লোগান ধরছি তো অন্যরা এক সাথে শ্লোগানে বলছি। মাঠে অনেক মানুষের পদচাড়নায় আর হাল্কা বৃষ্টিতে কিছু কাদা হয়ে উঠেছিলো। জামায়াত-শিবিরের সমর্থকগণের তর্জন গর্জনে আলতাব আলী পার্কে উপস্থিত কিছু বোনের চোখে ভয় দেখেছিলাম। এক সময় কাপুরুষগুলো হামলা করে বসে। অলগেইট তুলনামূলক ভাবে সেইফ রুট ছিলো, সেই পথে অনেক বোনদের এগিয়ে দিয়েছি। বসন্তের কোকিলের মতো নেতা হতে আসা বা নেতা হয়ে উঠা মানূষদের  দেখেছি বাস ধরে পালাতে। গনজাগরণের নামকরে নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করতে দেখেছি কিছু মানুষকে। সময় গড়িয়েছে, কতো কিছুর বানিজ্যিকিকরন হয়েছে কিন্তু হাজার হাজার মানুষের হ্রদয় থেকে যা হারায় নি তা হলো বাংলাদেশ।  আমার হ্রদয়ে অবস্থান করেআমার বংলাদেশ, আমাকে রেশনালি ভাবতে সাহায্য করে আমার জ্ঞান, আমাদের ইতিহাস, আমাদের অর্জন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমি আজ দেখি অন্য আলোয়, কৃতজ্ঞতা বেতার বাংলা ও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং গ্ণজাগরণ মঞ্চ ও অনেক কর্মিদের স্পিরিটকে যারা আমায় আলোর দিকের যাত্রাতে মাত্রা যোগ করেছেন।       

No comments:

Post a Comment